নয়ডা: ঠাকুর পুজো করে এসে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরলেন স্বামী। সেই অবস্থায় ছুড়লেন গুলি। আর ওই একই গুলিতে মৃত্যু হল স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই। অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশের জেলা মোরাদাবাদে। স্বামীর নাম আনেক পাল, বয়স প্রায় ৪০। স্ত্রী, সুমনা পাল, বয়স ৩৮ বছর। দুজনেই চণ্ডীগড়ে দিনমজুর হিসাবে কাজ করতেন। দিন কয়েক আগে মোরাদাবাদের খানপুর গ্রামে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা। মোরাদাবাদ গ্রামীণের পুলিশ সুপার সন্দীপ কুমার জানিয়েছেন ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। দম্পতির বাড়িতে ঘটেছিল। মৃত দম্পতির চার সন্তান আছে – এক মেয়ে ও তিন ছেলে। সন্দীপ কুমার বলেছেন, “দম্পতির আত্মীয়স্বজন, পরিচিতরা এবং সন্তানেরা পুলিশকে জানিয়েছে যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া হত।”
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এক বিয়ের অনুষ্ঠানে সুমনার একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের মধ্যে তীব্র ঝগড়া চলছিল। ১৩ জুন গভীর রাতে, আনেক পাল বাড়িতে পুজো করেন। তারপর স্ত্রীয়ের কাছে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। ওই অবস্থাতেই স্ত্রীকে গুলি করেছলেন তিনি। কিন্তু, একই গুলি আনেক পালের বুকেও লাগে। এফোঁড়-ওফোঁড় করে তাঁর পিঠ দিয়ে গুলিটি বেরিয়ে যায়। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই গুরুতর আহত হয়েছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁদের নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দুজনের কাউকেই বাঁচানো যায়নি।
বিলারি এলাকার পুলিশের সার্কেল অফিসার, অঙ্কিত কুমার জানিয়েছেন, আনেক পাল যে আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যবহার করেছিলেন সেটি ছিল একটি দেশী পিস্তল। কিন্তু, সে কীভাবে ওই আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিল, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর তারা জানিয়েছে, সম্ভবত বিবাদের জেরেই স্ত্রীকে হত্যা করতে গিয়েছিলেন আনেক। কিন্তু, দুর্ঘটনাবশত তাঁরও মৃত্যু হয়। তবে, এই ঘটনার পিছনে কালো জাদুর প্রভাব থাকতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ। স্ত্রীকে গুলি করার আগে আনেক পুজো করেছিলেন। এর থেকেই পুলিশ সন্দেহ করছে, আনেক সম্ভবত কালো জাদু বা তন্ত্রমন্ত্রের চর্চা করত। আরও তদন্তের পরই বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে একইসঙ্গে বাবা-মায়ের মৃত্যু হওয়ার এখন অকূল পাথারে পড়েছে তাঁদের চার সন্তান। পুলিশ জানিয়েছে, তারা আপাতত তাদের গ্রামের বাড়িতেই রয়েছে। তাদের মায়ের বাড়ির আত্মীয়রা ইতিমধ্যেই তাদের অধিকার পাওযার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছে। বিষয়টি বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখে এই বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন।