লখনউ: চোখে ঘুম নেই, মুখে দুটো গ্রাস তোলার জো নেই। ভয়ে থরথর করে কাঁপছে কিশোরী। মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারছে না কিছুতেই। প্রথমে গ্রামের চার যুবকের হাতে ধর্ষণ, তারপর অভিযোগ জানাতে গিয়ে পুলিশ আধিকারিকের লালসার শিকারও হতে হয়েছে তাঁকে। গোটা ঘটনায় বিচারব্যবস্থার উপরই ভরসা উঠে গিয়েছে তাঁর। কথা হচ্ছে উত্তর প্রদেশের নির্যাতিতার। সম্প্রতিই ১৩ বছরের ওই কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে গেলে, থানার স্টেশন ইনচার্জও তাঁকে ধর্ষণ করে। বর্তমানে নির্যাতিতার কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে। সেখানেই তাঁর উপরে হওয়া নির্যাতনের কথা তুলে ধরেছে।নির্যাতিত কিশোরীর কাউন্সিলরও জানিয়েছেন, গভীর মানসিক ক্ষত তৈরি হয়েছে কিশোরীর। নির্যাতনের দিনগুলি কিছুতেই ভুলতে পারছে না সে।
উত্তর প্রদেশের ললিতপুর জেলা থেকে ওই কিশোরীকে গত ২২ এপ্রিল অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল চার যুবক। তাঁরা ভোপালে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। কয়েকদিন পরে ফের তাঁকে গ্রামে ফেরত নিয়ে আসে অভিযুক্তরা। ২৭ এপ্রিল নির্যাতিতা কিশোরী যখন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে যায়, তখন পালি পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ তিলকধারী সরোজ তাঁকে ফাঁকা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
নির্যাতিতার কাউন্সিলর জানিয়েছেন, যখন দুই পুলিশ অফিসারের তত্ত্বাবধানে নির্যাতিতাকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন সে ভয়ে কাঁপছিল, প্রথমে কথাও বলতে চাইছিল না। ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর সে কথা বলতে শুরু করে। নির্যাতিতা জানায়, গত ২২ এপ্রিল তাঁর এক মাসতুতো দাদা ও তাঁর তিন বন্ধু নানা প্রলোভন দেখিয়ে ভোপালে নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা কোনও হোটেলেও চেক ইন করেনি, যাতে পুলিশের হাতে কোনও প্রমাণ না থাকে। দিনের বেলায় তারা রেলস্টেশনের আশেপাশের রাস্তায় বসে থাকত। রাতে একটা ব্রিজের নীচে ঠাই নিত তাঁরা। সেখানেই ওই চার যুবক ধর্ষণ করত।
নির্যাতিতা জানিয়েছে, তাঁকে পালা করে ধর্ষণ করত অভিযুক্তরা। একজন যখন তাঁর উপর একজন শারীরিক নির্যাতন চালাত, তখন বাকিরা নির্জন ওই ব্রিজের পাহারা দিত। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের কাছে বন্দুকও ছিল বলে জানিয়েছে ওই কিশোরী। অন্যদিকে, পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জের নামেও ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে সে। তবে থানার অন্য কোনও পুলিশকর্মীরা যে তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেনি, তাও জানিয়েছে কিশোরী।
ইতিমধ্য়েই ললিতপুরের ওই পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গিয়ে অপরাধের জায়গা পুলিশকে দেখিয়েছে নির্যাতিতা। এরপর তাঁকে ভোপালও নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই ব্রিজটি কোথায় ছিল তা বলতে না পারলেও, আশপাশ থেকে মসজিদের আজান ও ট্রেনের শব্দ শুনতে পেত বলে জানিয়েছে কিশোরী। সেই তথ্য ধরেই ঘটনাস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।