লখনউ: যোগী রাজ্যে ‘এনকাউন্টারে’ নিহত আরও এক ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধী। তার নাম মহম্মদ গুফরান। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি হত্যা এবং ডাকাতির অভিযোগ ছিল। উত্তর প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, এদিন ভোর ৫টা নাগাদ কৌশাম্বি জেলায় অভিযান চালায় পুলিশের এক বিশেষ দল। সেই সময়ই মুখোমুখি পড়ে যায় মহম্মদ গুরফান। পুলিশের মুখোমুখি হয়েই সে গুলি ছুড়তে শুরু করে। ফলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে। এই গুলিযুদ্ধে গুরুতর আহত হয় গুফরান। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি ৯ মিমি পিস্তল, .৩২ বোরের পিস্তল, কিছু তাজা কার্তুজ এবং একটি অ্যাপাচে বাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ। উত্তর প্রদেশ পুলিশ আরও জানিয়েছে, ১৩টিরও বেশি মামলায় অভিযুক্ত ছিল সে। এর মধ্যে হত্যা, হত্যার চেষ্টা, ডাকাতির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। প্রতাপগড়, সুলতানপুর এবং উত্তর প্রদেশের অন্যান্য জেলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল তার অপরাধ। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল প্রতাপগড়ে ‘সরেশাম জুয়েলার্স’ নামে এক গয়নার দোকানের মালিককে গুলি করে লুঠ করার অভিযোগ ছিল গুফরানের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরাও পড়েছিল।
তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন প্রতাপগড় পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি। অন্যদিকে সুলতানপুরের পুলিশ তাকে ধরার জন্য ২৫,০০০ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
যোগী আদিত্যনাথের আমলে, উত্তর প্রদেশে একের পর এক দাগী অপরাধীদের এনকাউন্টারে মৃত্যু হচ্ছে। এদিনের ঘটনা সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। ২০১৭ সালের মার্চে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে ১৮৬ জনের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল। অন্যদিকে এই ছয় বছরে, পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছে ৫,০৪৬ জন। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি ১৫ দিনে ৩০ জনেরও বেশি অভিযুক্ত অপরাধীকে গুলি করা হয়েছে উত্তর প্রদেশে।
উত্তর প্রদেশে এই লাগাতার এনকাউন্টারে মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের বাসিন্দাদের একাংশ খুশি হলেও, বাকিরা এই ‘বিচার’ পদ্ধতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের দাবি, কোনও বিচার ছাড়াই অপরাধীদের হত্যা করার এই প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এইভাবে চলতে থাকলে আইনের শাসন আর থাকবে না।