দেরাদুন : কুখ্যাত মাওবাদী নেতা ভাষ্কর পাণ্ডেকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিল পুলিশ। একাধিকবার ভাষ্করের খোঁজে বিভিন্ন জঙ্গলে হানাও দিয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ভাষ্করের মাথার উপর ২০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। অবশেষে আজ আলমোড়া পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধরা পড়ে ভাষ্কর। উত্তরাখণ্ডের হাল্দওয়ানি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিজিপি অশোক কুমার জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক কালে কুমায়ুন এবং সংলগ্ন এলাকায় মাওবাদীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। প্রথম এখানে মাওবাদী কার্যকলাপের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল ২০০৪ সালে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই এলাকা থেকে মোট ৩৩ টি পৃথক ঘটনার খবর সামনে এসেছে। ঘটনায় ২৪ জনের নাম জড়িয়েছে। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৩ জনকে পাকড়াও করা হয়ে গিয়েছে।
একমাত্র ভাস্কর পাণ্ডেকেই কিছুতে ধরতে পারছিলেন না উত্তরাখণ্ড পুলিশের আধিকারিকরা। বার বার পুলিশের চোখে ধুলে দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে বেরাচ্ছিল সে। অবশেষে আজ তাকে গ্রেফতার করেছে উত্তরাখণ্ড পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। ধৃত মাওবাদী নেতা ভাস্কর পাণ্ডের মাথার উপর ২০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। ভাস্কর গ্রেফতার হওয়ার কুমায়ুন এলাকা থেকে যে ২৪ জনের মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছিল, তাদের প্রত্যেকেই গ্রেফতার করে নিল পুলিশ।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল অশোক কুমার আরও জানিয়েছেন, ধৃত ভাষ্কর পাণ্ডেকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করবেন আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির থেকে ভাস্করকে নির্দেশ দেওয়া আছে, এই কুমায়ুন এবং সংলগ্ন এলাকায় মাওবাদী কার্যকলাপে গতি আনতে। উত্তরাখণ্ড পুলিশের কাছে ভাস্করকে গ্রেফতার করাটা একটি অনেক বড় সাফল্য। ভাস্কর পাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার ফলে উত্তরাখণ্ডে এই মুহূর্তে আর কোনও ‘ওয়ান্টেড’ মাওবাদী থাকল না।
উল্লেখ্য, মাসখানেক আগেই মাওবাদী নিকেশে বড় সাফল্য পেয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। এক অভিযানেই ১৩ মাওবাদীকে খতম করেছিল নাগপুর পুলিশ।
গোপন সূত্রে মাওবাদী উপস্থিতির খবর মিলেছিল আগেই, সেই সূত্র ধরেই নাগপুরের বিদর্ভে পুলিশি অভিযান চালিয়ে খতম করা হয়েছিল ১৩ জন মাওবাদীকে।
গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর মেলে যে, মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলির পায়দী-কোটমি জঙ্গলের কাছে একটি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে তেন্দু পাতার চুক্তি নিয়ে দেখা করতে আসার কথা কাসানসুর দালামের মাওবাদী নেতাদের। সেই অনুযায়ীই গ্রামের চারপাশে জঙ্গলে ঘাটি গাড়ে পুলিশ।
মাওবাদীরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করে ভোররাতে চুপিচুপি পালানোর চেষ্টা করলেও আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। শুরু হল গুলির লড়াই। জঙ্গলে কয়েক ঘণ্টা ধরে গুলির লড়াই চলার পর শেষমেশ পরাস্ত হয় মাওবাদীরা। সংঘর্ষস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায় তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে মোট ১৩ জন মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল।
ঘটনাস্থল থেকে মাওবাদীদের দেহের পাশাপাশি কয়েকটি অস্ত্র, কিছু সাহিত্যের বই ও দৈনন্দিন প্রয়োজনের কয়েকটি সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল পুলিশ সূত্রে।
আরও পড়ুন : সাতসকালে গুলির লড়াইয়ে বড় সাফল্য পুলিশের, মহারাষ্ট্রে নিকেশ ১৩ মাওবাদী