উত্তরকাশী: উত্তরকাশীর (Uttarkashi) সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজে আসছে পদে-পদে বাধা। অগার মেশিন ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজের সময়সীমা আরও বেড়ে গিয়েছে। বলা ভাল, আর নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা দিতে পারছেন না উদ্ধারকারী দলের আধিকারিকেরা। এখন ম্যানুয়ালি ড্রিলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। চলছে ভার্টিক্যাল ড্রিলিংও। তবে কোন পথে সফলতা আসবে, কবে আসবে- সবকিছুই এখন অনিশ্চিত। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রযুক্তির পাশাপাশি ঈশ্বরের (God) উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। উদ্ধারকারী বিশেষজ্ঞ দল, ইঞ্জিনিয়ার, বিশেষত স্থানীয় শ্রমিকরা প্রযুক্তির পাশাপাশি এখন দেবভক্তিকে হাতিয়ার করে নিজেদের মনোবল শক্ত করছেন।
এই এলাকার স্থানীয় দেবতা বাসুকিনাগ বা স্থানীয় ভাষায় বকনাগ। এখানকার যে কোনও কাজ শুরু হয় এই দেবতাকে পুজো দিয়েই। তাই এবার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে একেবারে বকনাগদেবের পূজ্য সিংহাসন তুলে আনা হয়েছে। সেটি রাখা হয়েছে টানেলের খোলামুখ প্রান্তের কাছে। সেই সিংহাসনে মাথা ঠেকিয়েই প্রতিদিন সুড়ঙ্গের ভিতরে কাজ করতে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা।
কেবল দেবতার সিংহাসনে মাথা ঠেকিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করা নয়, সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের জন্য গোটা গ্রামের মানুষ পুজো-অর্চনা শুরু করেছেন। যেদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেদিন থেকেই প্রতিদিন বিকেলে নিয়ম করে সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা ঢাকঢোল বাজিয়ে বকনাগদেবকে কাঁধে করে সুড়ঙ্গের মুখের সামনে নিয়ে আসেন। সেখানে বিগ্রহকে রেখে প্রার্থনা শুরু করেন সকলে। এমনকি গ্রামের পুরোহিতও সব কাজ ফেলে প্রতিদিন ওই সুড়ঙ্গের কাজে এসে বকবনাগদেবের উদ্দেশে বিশেষ পুজো-অর্চনা করেন। সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের সুস্থতার কামনায় এবং তাঁদের বাইরে নিয়ে আসার প্রার্থনায় পুজো দেন তিনি। পুরোহিতের সঙ্গে সেই পুজোয় সামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবমিলিয়ে, শ্রমিকদের দ্রুত সুস্থভাবে উদ্ধার করতে সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সকলে।