কলকাতা ও নয়া দিল্লি: লোকসভা ভোটের আগে দলের জাতীয় স্তরে অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে দলে সম্প্রসারণে নজর দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুস্মিতা দেব, বাবুল সুপ্রিয়, লুইজিনহো ফেলেইরো থেকে শুরু করে লিয়েন্ডার পেজ। বিরোধী জোট যদি তৈরি হয়, তাহলে নিজেকে তার নেত্রী হিসেবে তুলে ধরতে কোনও খামতি রাখছেন না তিনি। আর এবার আরও এক বড় মুখ জোড়াফুলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে ফেলতে পারেন বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। কানা ঘুষো শোনা যাচ্ছে, বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীকে নাকি এবার দলে টানতে চাইছে তৃণমূল।
আগামী সপ্তাহেই রাজধানীতে উড়ে যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। গুঞ্জন ছড়িয়েছে, ওই সময়েই নাকি তিনি বিজেপি সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তবে মানেকা-পুত্র বরুণ গান্ধী তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, সেই নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না তৃণমূল নেতারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ নেতার কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর আগামী সপ্তাহে রাজধানী সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে এবং সফরে বেশ কিছু চমক থাকছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দিল্লির রাজনীতির অলিন্দে কান পাতলেই একটি চাপা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একাধিক সূত্রে খবর, বরুণ গান্ধী তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর কালেই ঘাসফুলে যোগ দেবেন, নাকি পরবর্তী সময়ে যোগ দেবেন, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
সরাসরি কিছু না বললেও তৃণমূলের ওই প্রথম সারির নেতা জানিয়েছেন, “যে নেতারা বিজেপিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন, কিন্তু কংগ্রেসে যাওয়ার কোনও উপায় নেই, তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এই মুহূর্তে, এটা স্পষ্ট যে নরেন্দ্র মোদীকে থামাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস।”
সম্প্রতি বিজেপির জাতীয় ওয়ার্কিং কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী এবং তাঁর মা মানেকা গান্ধী। এই পরিস্থিতিতে মানেকা-পুত্র অন্য একটি রাজনৈতিক মঞ্চ খুঁজছেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, বরুণ গান্ধী লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের হত্যার নিন্দাও করেছেন। যা থেকে অন্তত এই ইঙ্গিতটুকু পাওয়া যাচ্ছে যে, গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে তাঁর বর্তমান সম্পর্ক আর যাই হোক না কেন, তা যে কোনওভাবেই সুমধুর বলা যায় না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশও মনে করছেন, বিজেপিতে কোণঠাসা বরুণ গান্ধী, এখন একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক মঞ্চের খোঁজ করছেন। আর সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁর জন্য এক সেরা বিকল্প হতে পারে।
এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে জানিয়েছেন, “বরুণ গান্ধী কংগ্রেসে যেতে পারবেন না। তাই তিনি এমন একটি দলের দিকে তাকিয়ে থাকবেন, যা তাকে একটি জাতীয় স্তরে মঞ্চ দিতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় স্তরে তার উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। জাতীয় স্তরে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে দলে নিলে তা বেশ আকর্ষণীয় হবে। এবং সেই ক্ষেত্রে, তৃণমূলের জন্য উভয় ক্ষেত্রেই লাভ হবে।”
আরও পড়ুন : Sukanta Majumder On Tathagata Roy: ‘ওঁ দলের সাধারণ সদস্য’, তথাগতর ‘আপাতত বিদায়’ মন্তব্যের পাল্টা সুকান্ত