নয়া দিল্লি: ফের সংঘাত আবহে জগদীপ ধনখড়। বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বহুবার রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত বেধেছে। এবার উপরাষ্ট্রপতি ধনখড় কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগে সুপ্রিম কোর্ট ও কেন্দ্রের সংঘাতল নিয়ে মুখ খুললেন। সংসদে আইন পাশ হওয়ার পর কেন সেটিকে সুপ্রিম কোর্ট ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে সংসদে আইন পাশ হওয়ার পর সেটি সুপ্রিম কোর্টের অসাংবিধানিক ঘোষণা করার ঘটনা ‘খুব গুরুতর ইস্যু’ বলে মন্তব্য করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। নয়া দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের উপস্থিতিতেই সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিছুটা ভর্ৎসনার সুরে ধনখড় বলেন, “আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সংসদে জনগণের ইচ্ছাকেই প্রতিফলিত করা হয়। অথচ সংসদে জনগণের ভোটে নির্বাচিত আইনসভার সদস্যদের পাশ করা আইনকে সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক বলছে, এই ঘটনার নজির বিশ্বে নেই।”
এপ্রসঙ্গে উপরাষ্ট্রপতির আরও মন্তব্য, “সংবিধানের কোথাও বলা হয়নি, সংসদে পাশ করা কোনও আইন বাতিল করা যেতে পারে।” ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে ধনখড় আরও বলেন, “আমি এখানে উপস্থিত সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তাঁরা উচ্চ মানের বিচার ব্যবস্থা, চিন্তাশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত মনন গঠন করুন। দয়া করে বিশ্বের একটি সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা খুঁজে বের করুন, যেখানে সাংবিধানিক বিধান বাতিল করা যেতে পারে।”
প্রসঙ্গত, কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম ব্যবস্থায় বদল আনেন। কলেজিয়াম পদ্ধতির বিকল্প জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এব্যাপারে ইতিমধ্যে সংসদে বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আর তারপরই এই পদ্ধতি নিয়ে জট বাধে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে এনজেএসি-কে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে কলেজিয়াম পদ্ধতি বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কলেজিয়াম পদ্ধতিতেই স্বচ্ছভাবে বিচারপতি নিয়োগ সম্ভব বলে জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। এবার এই বিতর্কের আসরে নামলেন খোদ উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়।