ভোপাল: পা যেন চলছেই না… সেই হাসপাতাল থেকে হেঁটে আসছেন, কোলে চার বছরের ভাগ্নি। না জীবিত নয়, এতদিন যে কোলে চেপে ঘুরে বেড়াত, চোখের সামনে খেলাধুলো করত, আজ তারই নিথর দেহ কোলে বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ভাগ্নির। পুলিশের নির্দেশেই ময়নাতদন্তের জন্য গ্রাম থেকে শহরের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয় চার বছরের ওই শিশুকন্যার দেহ। ময়নাতদন্ত হয়ে যেতেই পরিবারকে বলা হয়, দেহ নিয়ে যেতে। কিন্তু দেহ যে নিয়ে যাবেন, তার জন্য গাড়ি কোথায়? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বারংবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করে দেননি। বাধ্য হয়ে ভাগ্নির মরদেহ কোলে নিয়েই গ্রামের উদ্দেশে রওনা দিলেন ব্যক্তি। ভিড় বাসেও উঠলেন দেহ নিয়েই। হৃদয়-বিদারক এই ভিডিয়োটিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য প্রদেশে। একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হয় চার বছরের শিশুর। ময়নাতদন্তের জন্য ছত্তরপুর জেলা হাসপাতালে দেহ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্ত শেষের পর শিশুটির দেহ নিয়ে ফেরার সময়ই বিপাকে পড়েন শিশুটির মামা। শবদেহ বহনকারী গাড়ির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হলেও, হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, কোনও গাড়ি নেই। নিজেকেই দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অত্যন্ত গরিব ওই ব্যক্তির কাছে গাড়ি ভাড়া করার সঙ্গতি না থাকায়, ভাগ্নির দেহ কোলে নিয়েই তিনি বাস স্ট্য়ান্ডের দিকে রওনা দেন। এরপর তিনি দেহ নিয়েই ভিড় বাসেও ওঠেন।
A man carried the body of his four-year-old niece on his shoulders and took a bus to his village because he could not get a hearse from a hospital, This comes nearly four months after a four-year-old girl’s body was carried by her family on their shoulders. Both in Chhatarpur. pic.twitter.com/NXZUNODqUT
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) October 20, 2022
ওই ব্যক্তি জানান, ভাগ্নির দেহ নিয়ে তিনি দীর্ঘক্ষণ ধরেই শববাহী গাড়ির খোঁজ করেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের তরফে ব্যবস্থা তো দূর, কোনও সাহায্যও করা হয়নি। বেসরকারি শববাহী গাড়ি ভাড়া করার টাকা না থাকায়, তিনি হেঁটে হেঁটেই বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। এমনই খারাপ অবস্থা যে তাঁর কাছে বাসের টিকিট কেনারও টাকা ছিল না। পাশের এক যাত্রী তাঁর টিকিট কেটে দেন।
চিকিৎসক ও হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ উঠলে, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক লক্ষ্ণণ তিওয়ারি জানান, শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের দায়িত্ব। এতে হাসপাতাল বা চিকিৎসকদের কোনও ভূমিকা নেই। তাদের যেন এই বিষয়ে জড়ানো না হয়।
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়। এর আগেও মধ্য প্রদেশেই একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা সামনে উঠে এসেছে। চার মাস আগেই এক শিশুকন্যার দেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের। সেই ঘটনাটিও ছত্তরপুরেই হয়েছিল।