নয়া দিল্লি : গোটা বিশ্ব বর্তমানে করোনার এক চতুর্থ ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মাস্ক একবার মুখ থেকে নামলেই তার পরিণতি ভয়ঙ্কর হতে পারে। দেশবাসীকে সতর্ক করল কেন্দ্র। বিশেষ করে বড়দিন এবং বর্ষবরণের উৎসবে যাতে করোনা বিধিতে এতটুকুও খামতি না পড়ে, তা নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ দেশের সাধারণ নাগরিকদের ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন এবং অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এখন না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে কোভিড -১৯-উপযুক্ত আচরণবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জোর দিয়েছেন দ্রুত টিকাকরণের উপরেও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, ওমিক্রনে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত দেশে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। ১১৪ জন এখনও অবধি ওমিক্রনকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মূলত ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে এখনও অবধি ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এখনও অবধি ৮৮ জন এ রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি। ৬৭ জন ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন রাজধানীতে। তেলেঙ্গানায় এই সংখ্যাটা ৩৮। তামিলনাডুতে ৩৪। কর্নাটকে ৩১ জন আক্রান্ত, গুজরাটে ৩০ জন। কেরলে ২৭, রাজস্থানে ২২। এছাড়াও হরিয়ানা ও ওড়িশায় ৪ জন করে ওমিক্রনের শিকার হয়েছেন। জম্ম কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা ৩। এরপরই রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ। ২ জন করে ওমিক্রন আক্রান্ত হন এই দুই রাজ্যে। পাশাপাশি চণ্ডীগঢ়, উত্তরাখণ্ড, লাদাখে ১ জন করে ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশ করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন এবং প্রায় ৬১ শতাংশ মানুষ কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে এখনও পর্যন্ত প্রধান স্ট্রেন হল ডেল্টা। অতএব, আমাদের একই কৌশল নিয়ে চলতে হবে- কোভিড-১৯ আচরণবিধি মেনে চলা এবং ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনা।
শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে আরও জানানো হয়েছে, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলির ক্ষেত্রে যে চিকিৎসা প্রোটোকল মেনে চলা হচ্ছে, ওমিক্রনের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে। আলাদা কোনও চিকিৎসা প্রটোকলের প্রয়োজন নেই।
ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়তেই বিশ্বের একাধিক দেশ বুস্টার ডোজ়ের পথে হাটছে। ভারতেও বুস্টার ডোজ় দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও চলছে বিস্তর আলোচনা। শুক্রবার সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আইসিএমআরের ডিজি চিকিৎসক বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সরকার একটি নীতি প্রণয়নের জন্য বৈজ্ঞানিক তথ্য পর্যালোচনা করছে। এদিকে ওমিক্রন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কেন্দ্র বেসরকারী স্বাস্থ্য ক্ষেত্রগুলিকে প্রস্তুত থাকার জন্য আবেদন করেছে।