কলকাতা: বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টা। বিরোধীদের একসঙ্গে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কি বিরোধী জোট সম্ভব? তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের ‘সম্পর্কের’ জেরে এই প্রশ্ন একাধিকবার উঠেছে। একাধিক বিরোধী দলের সঙ্গে মমতার বৈঠক হলেও কংগ্রেসের সঙ্গে সেই উদ্যোগ দেখা যায়নি। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্নটা উঠছে। এবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল কংগ্রেস। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিজে না গিয়ে প্রতিনিধি হিসেবে সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারকে পাঠাচ্ছেন। এই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোট নিয়ে আপত্তি রয়েছে তৃণমূলের। তাই, একাধিকবার কংগ্রেসের ডাকা বিরোধীদের বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছে ঘাসফুল শিবির। আবার সংসদের বাইরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাই ধরনা দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আবার কংগ্রেসের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে আবার তাতে চিড় ধরেছিল। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই অবশ্য রাহুলের নাম নেননি। কিন্তু, ঘটনার উল্লেখ করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন।
আবার কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পর টুইট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি তাৎপর্যপূর্ণভাবে, বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য কর্নাটকের বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান। সরাসরি কংগ্রেসের উল্লেখ করেননি।
এই পরিস্থিতিতে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কংগ্রেস। সেখানে বিজেপি বিরোধী বেশিরভাগ দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লাহকেও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। খাড়্গে ব্যক্তিগতভাবে সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে ফোন করেছিলেন। এবং তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। সিপিআইএম-র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবকেও আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।
বিরোধী দলের নেতাদের যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেখানে মমতার প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন কাকলি ঘোষদস্তিদার। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সুতো বেঁধে রাখতে চাইছেন মমতা। তাই, নিজে না গেলেও প্রতিনিধিকে পাঠাচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনে ওই সুতো দিয়ে জোটের মালা কি গাঁথবেন তৃণমূল সুপ্রিমো? সেটাই এখন দেখার।