নয়া দিল্লি: ভারতে এসেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization)-র প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস (Tedros Adhanom Ghebreyesus)। গুজরাটের (Gujarat) জামনগরে প্রাচীন ঔষধির জন্য যে বিশ্ব কেন্দ্র বা গ্লোবাল সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে, তারই ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি দেশের মাটিতে পা রেখেছেন, তবে গুজরাটবাসীকে যে এভাবে চমকে দেবেন, তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। জামনগরের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়েই তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বললেন “নমস্কার”। তারপরই হাসিমুখে রাজ্যবাসীর কাছে জানতে চাইলেন, “কেম ছো…(কেমন আছো)”। হু প্রধানের মুখে গুজরাটি শুনে আনন্দে আপ্লুত হয়ে গেলেন উপস্থিত সকলেই।
সাহিত্য থেকে পদার্থবিদ্যা বা মহাকাশ বিজ্ঞানের চর্চায় যেমন প্রাচীন ভারতের অনস্বীকার্য ভূমিকা ছিল, তেমনই চিকিৎসা শাস্ত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে দেশের। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে আধুনিক বিজ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে প্রাচীন ঔষধির গ্লোবাল সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল, মঙ্গলবারই এই কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যেই মঞ্চে উঠে প্রথমেই হু প্রধান গুজরাটি ভাষায় জানতে চান সকলে কেমন আছেন। তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণ শুনে দর্শক আসনে বসে থাকা প্রধানমন্ত্রীও হাততালি দিয়ে ওঠেন।
#WATCH | WHO Director-General Dr Tedros Adhanom Ghebreyesus greets the public in Gujarati during the inaugural ceremony of the WHO-Global Centre for Traditional Medicine in Jamnagar. pic.twitter.com/Mexd6RUXLw
— ANI (@ANI) April 19, 2022
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চিরাচরিত চিকিৎসা ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে, বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে কম খরচে প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্যই এই গ্লোবাল সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই ৩৫ একর জমির উপরে এই সেন্টার তৈরি হয়ে যাবে। তার আগে অবধি ইন্সটিটিউট অব টিচিং অ্যান্ড রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদ থেকেই এই সেন্টারের কাজ চলবে।
ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস বলেন, “গোটা বিশ্বের লক্ষাধিক মানুষের কাছেই যেকোনও রোগের চিকিৎসার জন্য প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিই প্রধান ভরসার স্থল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই গ্লোবাল সেন্টার তৈরি করছে প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্রের সঙ্গে আধুনিক বিজ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটানো ও এই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করার জন্য।”
ভারতের তরফে ২৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এই প্রকল্পে। এই প্রকল্প নিয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, “প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিও বিজ্ঞান নির্ভরই ছিল। শত শত বছরের জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই এই চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কার করা হয়েছিল। আগামী ৩০ বছরের মধ্যেই এই চিকিৎসা পদ্ধতি সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরবর্তী স্তরে পা রাখতে গেলে গ্লোবাল ডেটাবেস তৈরির জন্য আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।”