আরও একবার ইতিহাস রচনা করেছেন ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়াল। গত শুক্রবার (১৯ অগস্ট) 'এসএফও এভিয়েশন মিউজিয়ামে' স্থান করে নিয়েছেন তিনি। সান ফ্রান্সিসকো এয়ারপোর্টে অবস্থিত 'লুই এ টারপেন এভিয়েশন মিউজিয়াম' বা এসএফও উড়ান ইতিহাসের যুগান্তকারী ঐতিহাসিক নমুনা রয়েছে। তাদের পাশেই প্রথম ভারতীয় মহিলা পাইলট হিসেবে জায়গা করে নিলেন ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়াল। আসলে ইতিহাস রচনা করা যেন তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কে তিনি? আসুন চিনে নেওয়া যাক ছবিতে ছবিতে -
ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়াল ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক মহিলা পাইলট। ২০০৪ সালের মে মাসে তিনি এয়ার ইন্ডিয়া সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে, তিনি এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৭৭ বিমানের প্রথম ও সর্বকনিষ্ঠ মহিলা কমান্ডার হয়েছিলেন। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেই তিনি তার পাইলট হওয়ার স্বপ্নের দৌড় শুরু করেছিলেন।
ইতিহাস রচনা করা ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়ালের অভ্যাস। একাধিক ক্ষেত্রে প্রথম হওয়ার কীর্তি স্থাপন করেছেন তিনি। প্রথম মহিলা কমান্ডার হিসেবে তিনি হিন্দুকুশ পর্বতমালার উপর দিয়ে একটি বোয়িং ৭৭৭ বিমান উড়িয়েছেন। তবে তাঁর সবথেকে স্মরণীয় কীর্তি হল প্রথম মহিলা ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে বিশ্বের দীর্ঘতম উড়ান পথে বিমান ওড়ানো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসো (SFO) থেকে ভারতের বেঙ্গালুরু পর্যন্ত ১৬,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথই বিশ্বের দীর্ঘতম উড়ানপথ। মাঝে পড়ে গোটা উত্তর মেরু। ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো, ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়ালের নেতৃত্বে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি সর্ব-মহিলা পাইলট দল ওই পথ অতিক্রম করে ইতিহাস রচনা করেছিল।
এয়ার ইন্ডিয়ার সর্ব-মহিলা পাইলটদের এই কৃতিত্ব মুগ্ধ করেছে এসএফও এভিয়েশন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষকে। এরপরই ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়ালকে তাদের জাদুঘরে স্থান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রথম ভারতীয় মহিলা পাইলট হওয়ার পাশাপাশি, তিনিই একমাত্র জীবিত ব্যক্তি, যাঁকে এই জাদুঘরে স্থান দেওয়া হয়েছে।
১৯৮০ সালে সান ফ্রান্সিসকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত হয়েছিল এএফও এভিয়েশন মিউজিয়াম। এসএফও মিউজিয়ামে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের বিভিন্ন ঐতিহাসিক নমুনা সংরক্ষণ করা হয়। এখনও পর্যন্ত, উড়ান শিল্পের ইতিহাস সম্পর্কিত দেড় লক্ষ বস্তু এই জাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে। এই প্রথম এই জাদুঘরে কোনও পাইলটকে জায়গা দেওয়া হল।
এসএফও মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জোয়া আগরওয়ালের বিমান চালনার বিশিষ্ট কর্মজীবনের পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য তাঁর বিশ্বব্যাপী সক্রিয়তাকে সম্মানিত করার লক্ষ্যেই তাঁকে এই জাদুঘরে স্থান দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্বের লক্ষ লক্ষ তরুণীকে উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনুসরণে অনুপ্রাণিত করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১ সালেই ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়ালকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের জেনারেশন ইকুয়ালিটি মুখপাত্র করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ক্যাপ্টেন জোয়া আগরওয়াল বলেছেন, "এই জাদুঘরে আমি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি দেখে অবাক হয়েছি। এসএফও এভিয়েশন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না যে, আমি আমেরিকার একটি মর্যাদাপূর্ণ এভিয়েশন মিউজিয়ামের অংশ। আমার যখন আট বছর বয়স ছিল, তখনই আমি আকাশ ছুঁতে চেয়েছিলাম।