Azimullah Khan: সত্যিই ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান এক মুসলিমের তৈরি? কে আজিমুল্লাহ খান?

Mar 26, 2024 | 4:16 PM

Azimullah Khan: এক মুসলিম ব্যক্তিই প্রথম 'ভারত মাতা কি জয়' স্লোগান দিয়েছিলেন। সোমবার (২৫ মার্চ), নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এক সমাবেশে এই দাবি করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি নাম করেছেন আজিমুল্লাহ খানের। কে এই ব্যক্তি? সত্যিই কি ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান তাঁর তৈরি?

Azimullah Khan: সত্যিই ভারত মাতা কি জয় স্লোগান এক মুসলিমের তৈরি? কে আজিমুল্লাহ খান?
ঝাঁসি জাদুঘরে রাখা আজিমুল্লাহ খানের মূর্তি
Image Credit source: Twitter

Follow Us

তিরুবনন্তপুরম: সোমবার (২৫ মার্চ), নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এক সমাবেশে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দাবি করেছেন, এক মুসলিম ব্যক্তিই প্রথম ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়েছিলেন। সিএএ থেকে বিজেপি সরকার মুসলিমদের বাদ দিয়েছে। তাহলে সংঘ পরিবার কি তারা ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দেওয়াও বন্ধ করে দেবে? প্রশ্ন তুলেছেন বিজয়ন। তিনি বলেন, “আজিমুল্লাহ খান, একজন মুসলিমই প্রথম ভারত মাতা কি জয় স্লোগান তুলেছিলেন। সঙ্ঘ পরিবারের অনুগামীরা তা জানেন না। একজন মুসলমানের তৈরি বলে তারা কি এই স্লোগানও বাদ দিয়ে দেবে?” শুধু ভারত মাতা কি জয় স্লোগানই নয়, জয় হিন্দ স্লোগানও নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্য, আবিদ হাসানের তৈরি বলে জানান তিনি। তাঁর এই বক্তৃতা রাজনৈতিক মহলে হইচই ফেলে দিয়েছে। আবিদ হাসানের কাহিনি অনেকেরই জানা থাকলেও, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কে এই আজিমুল্লাহ খান? সত্যিই কি ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান তাঁর তৈরি? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

উত্তর প্রদেশের কানপুরে জন্মেছিলেন আজিমুল্লাহ খান। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ, যাকে স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ বলা হয়, সেই যুদ্ধের অন্যতম কুশলী ছিলেন তিনি। তবে, তার আগে তিনি মানুষ হয়েছিলেন ব্রিটিশ মিশনারিদের হাতেই। ইংরেজি এবং ফরাসি দুই ভাষাই জানতেন তিনি। শিক্ষা শেষ করে ব্রিটিশ অফিসারদের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ নিয়েছিলেন তিনি। পরে, মারাঠি নেতা নানাসাহেব পেশওয়ার সেক্রেটারি এবং প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে কাজ নিয়েছিলেন আজিমুল্লাহ খান। নানাসাহেব ছিলেন শেষ মারাঠা পেশোয়া, দ্বিতীয় বাজি রাওয়ের দত্তক পুত্র। দ্বিতীয় বাজি রাও-এর মৃত্যুর পর, ব্রিটিশরা তাঁকে পেনশন দিতে অস্বীকার করেছিল। ইংল্যান্ডে গিয়ে এই মামলা উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য আজিমুল্লাহ খানকেই বেছে নিয়েছিলেন নানাসাবেব।

ইংল্যান্ড থেকে ভারতে ফেরার সময়, মাল্টায় রুশ বাহিনীর হাতে ইঙ্গ-ফরাসি সৈন্যদের পরাজয়ের সাক্ষী হয়েছিলেন আজিমুল্লাহ খান। রাশিয়ার সামরিক ক্ষমতা নিজের চোখে দেখতে তিনি ফ্রান্স এবং ক্রিমিয়া হয়ে কনস্টান্টিনোপলে যান। এই সফরকালে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ব্রিটিশরা অজেয় নয়। আর এটাই তাঁকে মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। ভারতে ফিরে, নানাসাহেবকে তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিপদ সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। এর মধ্যেই শুরু হয়েছিল সিপাহি বিদ্রোহ। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহকে সমর্থন করার জন্য তিনি ইচ্ছুক রাজ্যগুলির শাসকদের চিঠি লিখেছিলেন। এর পাশাপাশি, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য তিনি হিন্দি এবং উর্দুতে পয়ম-এ-আজাদি নামে এক সংবাদপত্রও প্রকাশ করা শুরু করেছিলেন। যে কারণে তিনি ‘ক্রান্তিদূত’ বা ‘বিপ্লবের দূত’ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

পেনশন না পেয়ে বিরক্ত নানাসাহেবও শেষ পর্যন্ত সিপাহীদের এই বিদ্রোহে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কানপুর বিদ্রোহের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। এরপর, প্রতিশোধ নিতে ব্রিটিশরা নানার দুর্গে হামলা চালিয়েছিল। ১৮৫৯ সালে, নেপালে পালিয়ে যেতেবাধ্য হয়এছিলেন নানাসাহেব। সেখানেই জীবনের শেষ কয়েকটা বছর ছিলেন তিনি। মারাঠা নেতার সঙ্গে নেপালে পালিয়েছিলেন আজিমুল্লাহ খানও। ১৮৫৯-এর অক্টোবরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু, আজিমুল্লাহ খানই কি প্রথম ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়েছিলেন? দ্য হিন্দু-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের সময় তিনি স্লোগান তুলেছিলেন, ‘মদর-ই-ওয়াতন, ভারত কি জয়’। যার অর্থ, ‘মাতৃভাষায় তোমার মাতৃভূমির প্রশংসা কর, ভারতের জয়।

Next Article