Birth date: কেন দক্ষিণের মুখ্যমন্ত্রীরা দম্পতিদের বেশি বেশি সন্তান প্রসব করতে বলছেন?

Birth date: অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু মানুষকে অন্তত দুই বা তার বেশি সন্তান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও জনগণের কাছে ১৬টি সন্তান নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। কম জন্মহারের জন্যই কি এই সকল মন্তব্য?

Birth date: কেন দক্ষিণের মুখ্যমন্ত্রীরা দম্পতিদের বেশি বেশি সন্তান প্রসব করতে বলছেন?
অতিরিক্ত সন্তান প্রসবের পক্ষে সওয়াল দক্ষিণী মন্ত্রীদেরImage Credit source: PTI and Getty imagaes
Follow Us:
| Updated on: Oct 21, 2024 | 8:48 PM

আশীষ শর্মা, নয়া দিল্লি: অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু ভবিষ্যতের জন্য জন্মহার বাড়াতে অন্তত দুই বা তার বেশি সন্তান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, তাঁর সরকার এমন একটি আইন আনার পরিকল্পনা করছে যাতে কেবলমাত্র দুই বা ততোধিক সন্তানধারীরা স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। চন্দ্রবাবু নাইডুর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনও। তিনিও জনগণের কাছে ১৬টি করে সন্তান নেওয়ার আবেদন করেছেন। দক্ষিণের মুখ্যমন্ত্রীরা কেন দম্পতিদের আরও বাচ্চা নিতে বলছেন?

১৯ অক্টোবর চন্দ্রবাবু নাইডু বলেছেন, “রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে। প্রত্যেকেরই এই বিষয়ে চিন্তা করা উচিত, এবং পরিবারের লক্ষ্য হওয়া উচিত কমপক্ষে দুই বা তার বেশি সন্তান নেওয়া। অতীতে, আমি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলেছিলাম, কিন্তু এখন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য জন্মহার বাড়াতে হবে। রাজ্য সরকার এমন একটি আইন আনার পরিকল্পনা করছে, যা শুধুমাত্র দুই বা ততোধিক সন্তানধারীগের স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেবে।”

চন্দ্রবাবু নাইডুর বক্তব্যের পরপরই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, চেন্নাইয়ের এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আজ, লোকসভা কেন্দ্র কমানোর একটি পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এর ফলে একটা প্রশ্ন ওঠে, কেন আমরা কম সন্তান ধারণে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখব? কেন আমরা ১৬টি করে সন্তান ধারণের লক্ষ্য নেব না?”

এমন বক্তব্যের পেছনে যুক্তি কী?

দক্ষিণ ভারতে জনসংখ্যায় বয়স্কদের হার ক্রমে বাড়ছে। সেই সঙ্গে ক্রমে কমছে ফার্টিলিটির হার। এই দুই উদ্বেগের মোকাবেলার বৃহত্তর চেষ্টার অংশ হিসাবে এই মন্তব্যগুলি এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফার্টিলিটির হার ক্রমে কমা শ্রমের ঘাটতি এবং সামাজিক ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে। এর মধ্যে ২০৫০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার একটি বৃহত্তর অংশর বয়স ৬০ বছরের বেশি হবে।

জাতীয় গড়ের তুলনায় অন্ধ্র প্রদেশের ফার্টিলিটির হার কত?

দক্ষিণের রাজ্যগুলির ফার্টিলিটির হার উত্তরের রাজ্যগুলির তুলনায় কম। অন্ধ্র প্রদেশের গড় ফার্টিলিটির হার ১.৫ এবং তামিলনাড়ুর ১.৮। দুটিই জাতীয় গড় ২-এর থেকে কম।

নাইডু কী এই প্রথম এমন আবেদন করলেন?

মোটেই না। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে ভুল বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে, চন্দ্রবাবু নাইডু ধারাবাহিক অপরাধী। ২০১৫ সালেও তিনি বলেছিলেন, অল্পবয়সীরা তাড়াতাড়ি বিয়ে করছে না, এবং তারা করলেও তাদের সন্তান হচ্ছে না। এরপর, ২০১৬ সালে, তিনি এক সন্তান বা নিঃসন্তান হিসেবে সন্তুষ্ট থাকার জন্য ধনীদের নিশানা করেছিলেন। জাতীয় জনসংখ্যা নীতিতে বলা হয়েছে, কে কতজন সন্তান ধারণ করবেন, তা ব্যক্তি পছন্দের বিষয়। তার বিবৃতিগুলি এই নীতির বিরুদ্ধে। তার উপর, তিনি নিজেকে একজন প্রযুক্তিবিদ এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ বলে দাবি করেন। কাজেই তাঁর এমন মন্তব্য উদ্বেগজনক।

সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তে সরকারের কি কোনও ভূমিকা থাকা উচিত?

প্রকৃতপক্ষে না। গর্ভনিরোধক, প্রসব-পূর্ব যত্ন, প্রসব পরবর্তী যত্ন এবং একটি সুস্থ শৈশবের জন্য ভাল স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত সরকারের ভূমিকা। জাতীয় জনসংখ্যা নীতিতে, ২০৪৫ সালের মধ্যে একটি স্থিতিশীল জনসংখ্যা অর্জনকে এই নীতির অন্যতম প্রাথমিক উদ্দেশ্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।