Vaccination Certificate: ‘টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকায় আপনি এত লজ্জিত কেন?’ আবেদনকারীকে ধমক হাইকোর্টের

Kerala High Court: আবেদনকারীর কাছে কেরল হাইকোর্টের পাল্টা প্রশ্ন, "টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকায় আপনি এত লজ্জিত কেন? তিনি তো আমাদের প্রধানমন্ত্রী।"

Vaccination Certificate: 'টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকায় আপনি এত লজ্জিত কেন?' আবেদনকারীকে ধমক হাইকোর্টের
প্রধানমন্ত্রীর ছবি সহ করোনা টিকার শংসাপত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 13, 2021 | 4:43 PM

তিরুবনন্তপুরম : করোনা টিকার শংসাপত্রে কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকবে? টিকার শংসাপত্র প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়ার ইস্যুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু সেই আবেদন ধোপে টিকল না। বরং এই ধরনের আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি। আবেদনকারীর কাছে কেরল হাইকোর্টের পাল্টা প্রশ্ন, “টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকায় আপনি এত লজ্জিত কেন? তিনি তো আমাদের প্রধানমন্ত্রী।”

আজ এই মামলাটির শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি পি ভি কুনহিকৃষ্ণণের এজলাসে। মামলাটিতে তাঁর পর্যবেক্ষণ, “তিনি তো আমাদেরই প্রধানমন্ত্রী, অন্য কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী তো নন। আমাদের জনগণের রায়েই তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। কেবল তাঁর সঙ্গে আপনার রাজনৈতিক মতপার্থক্য রয়েছে বলে, আপনি এটিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আপনি এত লজ্জিত কেন?”

হাইকোর্ট আবেদনকারীর কাছে আরও প্রশ্ন করে, “দেশের ১০০ কোটি মানুষের বাকিদের কারও এতে কোনও সমস্যা নেই, তাহলে আপনার কেন সমস্যা? আমাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে, কিন্তু তারপরেই তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আপনি বিচার বিভাগের সময় নষ্ট করছেন।”

এদিকে নিজের আবেদনের সপক্ষে ওই ব্যক্তি যুক্তি দেন, অন্যান্য দেশগুলির কোথাও এই টিকার শংসাপত্রে এই রকমভাবে প্রধানমন্ত্রীদের ছবি দেওয়া থাকে না। সেই প্রেক্ষিতে কেরল হাইকোর্ট বলে, “হয়ত সেই সব দেশ তাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গর্বিত নয়, কিন্তু আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গর্বিত। আপনার গর্বিত হওয়া উচিত, আপনার টিকাকরণের শংসাপত্রে আপনার প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে।”

উল্লেখ্য, এই মামলার আবেদনকারী দিল্লির জওহরলাল নেহরু লিডারশিপ ইন্সটিটিউটের সঙ্গে জড়িত। সেই প্রসঙ্গে টেনে বিচারপতি বলেন, “আপনি যেখানে কাজ করেন, সেটিও একজন প্রধানমন্ত্রীর নামে। তাহলে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কেন বলছেন না নাম বদলে ফেলার জন্য?”

এর আগেও কেরল হাইকোর্টে এই একইধরনের মামলা জমা পড়েছিল। মামলাকারী ছিলেন কেরলের এক বর্ষীয়ান নাগরিক পিটার মায়লিপারামপিল। তাঁর বক্তব্য ছিল, তিনি এক বেসরকারি হাসপাতাল থেকে দুটি ডোজ় নিয়েছেন। নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়েছেন। সুতরাং, তাঁর করোনা টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকাটা নাকি তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল। এই মর্মে মামলা দায়ের হয়েছিল।

সেই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি এন নাগারেশ মৌখিকভাবে বলেছিলেন, এই ধরনের আবেদনের ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। বিচারপতি বলেছিলেন, “এটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রস্তাব। আগামিকাল যে কেউ এখানে এসে প্রতিবাদ করতে পারে, যে তারা মহাত্মা গান্ধীকে পছন্দ করে না এবং আমাদের মুদ্রা থেকে তাঁর ছবি অপসারণ করতে চাইছে। এটি তাদের রক্ত এবং ঘাম ঝরিয়ে উপার্জন করা এবং তারা এতে গান্ধীজির মুখ দেখতে চান না। তখন কী হবে?”

করোনা টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যসভাতেও প্রশ্ন উঠেছিল। কোভিড টিকা শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছাপানো কি বাধ্যতামূলক? বাদল অধিবেশনের সময় রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। ১০ অগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার একটি লিখিত উত্তর দিয়ে জানিয়েছিলেন, “প্রধানমন্ত্রীর একটি উদ্ধৃতি সহ ছবি করোনা টিকার শংসাপত্রে দেওয়ার ফলে, কোভিড কালে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও আচরণ অনুসরণ করার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির বার্তাকে আরও শক্তিশালী করবে।”

আরও পড়ুন : Mamata in Goa: ‘ভোট ভাগাভাগি করতে নয়, ভোট ঐক্যবদ্ধ করতে গোয়ায় এসেছি’