নয়া দিল্লি: সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে তদন্তের গতি কেন এত শ্লথ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই-কে এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। আজ প্রধান বিচারপতি এনভি রামণ, বিচারপরি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিভারপরি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানি। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলা না তোলা হয়। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছাড়া সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারপতি বদল না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
১০-১৫ বছরের পুরনো মামলায় জমা পড়েনি চার্জশিট:
সাংসদ বা বিধায়কদের বিরুদ্ধে হওয়া কোনও কোনও মামলায় ১০-১৫ বছর কেটে গেলেও চার্জশিট পর্যন্ত জমা পড়েনি। এ দিন এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। ইডি ও সিবিআই-এর দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ীম ৫১ জন সাংসদ ও ৭১ জন বিধায়কর বিরুদ্ধে রয়েছে আর্থিক তছরূপের মামলা আর ১২১ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে সিবিআই-এর মামলা। প্রধান বিচারপতি পরিসংখ্যা তুলে ধরে জানান, ‘প্রাক্তন সাংসদ সহ ৫১ জন সাংসদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের মামলা রয়েছে। কোনও কোনও মামলা ৮-১০ বছরের পুরনো। আর ১২১টি সিবিআই-এর মামলা রয়েছে। যার মধ্যে সবথেকে পুরনো মামলা ২০১০-এর। ৩৭টি মামলার তদন্ত চলছে।’
এজেন্সিগুলির কাজের চাপ প্রবল:
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা এজেন্সিগুলিকে হতাশ করতে চাই না। আমরা জানি তাদের কাঁধেও বিচারপতিদের মতোই প্রবল কাজের ভার। তাই আমরা ধৈর্য ধরছি।’ আর্থিক তছরূপের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক মামলাতেই শুধু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ছাড়া আর কিছুই করা হয়নি। আর চার্জশিট না পেশ করে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কোনও অর্থ নেই।’
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ইডির কোনও কোনওও মামলায় বিদেশ থেকে তথ্য পাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সেই তথ্য পেতে দেরি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে সময় লেগে যায়। যদিও এ ক্ষেত্রে তিনি অজুহাত দিচ্ছেন না বলেই উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বিচারপতিরা মামলার একটা সময়সীমা ধার্য করে দিতে পারে। তবে কর্মী সংখ্যা কম থাকা যে মামলায় দেরি হওয়ার একটা বড় কারণ, সে কথা উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।
স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট:
সাংসদ- বিধায়কদের বিরুদ্ধে হওয়ার মামলার তদন্তে কেন দেরি হয়, সেই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। ২০১৬-এ সেই আবেদন জানানো হয় সুপ্রিম কোর্টে। আজ সেই মামলার শুনানিতে সলিসিটির জেনারেলকে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে একটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে বিচারপতিদের বেঞ্চ। দুই বিশেষ নির্দেশও দিয়েছে আদালত:
১. যে রাজ্যে মামলা হয়েছে, সেই রাজ্যের হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া সাংস বা বিধায়কের বিরুদ্ধে হওয়া কোনও মামলা তোলা যাবে না।
২. অবসর না নেওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছাড়া কোনও বিচারপতিকে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে সরানো যাবে না। আরও পড়ুন: কার দখলে থাকবে পঞ্জশীর? রফা করতে মাসুদের সঙ্গে বৈঠক তালিবান প্রতিনিধি দলের