নয়া দিল্লি: কংগ্রেসের নেতৃত্বে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ২৬ বিরোধী দলের ইন্ডিয়া জোট। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। অথচ, অনাস্থা বিতর্কে বক্তার তালিকায় তাঁর নাম নেই কেন? বৃহস্পতিবার (১০ অগস্ট), লোকসভায় অনাস্থা বিতর্কের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে এই প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘কলকাতা থেকে কী কোনও ফোন এসেছিল?’ স্পষ্টতই ইঙ্গিত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। তৃণমূলের চাপেই অধীরকে বক্তার তালিকায় রাখেনি কংগ্রেস, তাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বক্তব্য রেখেছিলেন শরদ পাওয়ার, ২০০৩ সালে তৎকালীন বিরোধী দলনেতা সনিয়া গান্ধী। ২০১৮ সালে, লোকসভায় অনাস্থা বিতর্কের বক্তব্য রেখেছিলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। কিন্তু এবার দেখুন অধীর চৌধুরীর কী অবস্থা হয়েছে। তাঁর দল তাঁকে কথা বলতে দিচ্ছে না। কলকাতা থেকে কি কোনও ফোন এসেছিল?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইন্ডিয়া জোটের অংশ হলেও, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতা করে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস। জোটের অস্বস্তিকর জায়গায় আঘাত করলেন তিনি। বিশেষ করে মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারের সোচ্চার সমালোচক অধীর চৌধুরী। চিটফান্ড কেলেঙ্কারি থেকে রাজনৈতিক হিংসার মতো প্রসঙ্গে প্রায়শই তিনি বাংলার তৃণমূল সরকারকে বিদ্ধ করেন। বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে গোপন আঁতাতের অভিযোগ করেন। উল্টোদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় আবার অধীরকে বিজেপির এজেন্ট বলে কটাক্ষ করেছেন। ইন্ডিয়া জোটের এই অস্বস্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে, এই জোট যে কতটা সুবিধাবাদী, তাও প্রমাণ করে দিলেন মোদী। বাংলায় তৃণমূলের ‘অপশাসন’-এর সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতারা। অথচ, জোটের স্বার্থে এখন তাদের মুখে কুলুপ আঁটতে হচ্ছে। জোটের স্বার্থে বিসর্জন দিতে হচ্ছে নীতি-নৈতিকতার।
এর আগে বুধবার, অনাস্থা বিতর্কে অংশ নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও অধীর চৌধুরীকে বক্তাদের তালিকায় না রাখা নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছিলেন। তার বক্তৃতার সময় বারংবার বাধা দিচ্ছিলেন অধীর। অমিত শাহ তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, তাঁকে তাঁর দলই কথা বলার সুযোগ দেয়নি। তাই তিনি অন্যরা বলার সময়, বারে বারে উঠে বাধা দিচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য রাখতে তাঁকে কিছু সময় দেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে।