ভোপাল : দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭২ তম জন্মদিন। আর আজই সুদূর নামিবিয়া থেকে ভারতে এল ৮ টি চিতা। প্রায় সাত দশক পর মোদীর হাত ধরে দেশে এল চিতা। মধ্য প্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে মোদীর উপস্থিতিতে এদিন আফ্রিকার এই চিতাদের ছাড়া হয়। এই ৮ জনের দলে রয়েছে পাঁচটি স্ত্রী ও তিনটি পরুষ চিতা। গত ১৯৫২ সালেই ভারতের মাটি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় চিতা। তারপর দীর্ঘ সাত দশক পর এবার ভারতীয়রা পেল ৮ চিতা। এবার থেকে মধ্য প্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যাবে এই আট ‘অতিথি’দের। সেখানেই হবে চিতা সংরক্ষণের ব্যবস্থা।
চিতাদের আস্থানা হিসেবে কুনো জাতীয় উদ্যানকেই কেন বেছে নেওয়া হল?
বেশি উচ্চতা, উপকূল ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ছাড়া ভারতের বেশ খানিকটা অংশ চিতার বাসস্থানের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই আট চিতাদের বাসস্থানের জন্য উপযুক্ত জায়গা বেছে নেওয়ার জন্য সমীক্ষা অনেকদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ২০১০ এবং ২০১২ সালে ওয়াইল্ডও ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (WTI) এর সমীক্ষায় মধ্য প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, গুজরাট এবং উত্তর প্রদেশের ১০ টি জায়গা খতিয়ে দেখা হয়। তারপর জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা, শিকারের ঘনত্ব, প্রতিযোগী শিকারিদের জনসংখ্যা ও ঐতিহাসিক পরিসরের উপর ভিত্তি করে এই সমীক্ষা চালানো হয়। আর এই সমীক্ষায় কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানকেই চিতাদের জন্য সেরা বাসস্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
Project Cheetah is our endeavour towards environment and wildlife conservation. https://t.co/ZWnf3HqKfi
— Narendra Modi (@narendramodi) September 17, 2022
কোনও মানব বসতি নেই :
মানুষের সঙ্গে চিতাদের সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ মানুষ তাদের শিকার নয়। গবাদি পশুদের উপরও তারা আক্রমণ করে না। তবে চিতাদের বাসস্থানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জায়গা। এটি দ্রুততম স্থলজ প্রাণী হিসেবে পরিচিত। চিতার গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১২৩ কিলোমিটার। তাই তাদের জন্য বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়। তাই উচ্চ জনঘনত্বের কোনও তৃণভূমিতে চিতাদের রাখা যাবে না। বেশ কয়েক বছর আগে কুনো জাতীয় উদ্যান থেকে প্রায় ২৪ টি গ্রাম ও তাদের গৃহপালিত পশুদের সম্পূর্ণ স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন সেই জায়গায় তৃণভূমি গড়ে উঠেছে। তাই চিতাদের জন্য প্রায় ৭৪৮ বর্গকিলোমিটারের এই বাসস্থানকে উপযুক্ত বলে নির্বাচন করা হয়েছে।
প্রতিযোগী শিকারীদের সহাবস্থান :
সরকারের পরিকল্পনা অনুসারে, কুনোতে বাঘ, সিংহ, লেপার্ড, চিতা সহাবস্থান করতে পারে। এখানে ইতিমধ্যেই বাঘ , সিংহ ও লেপার্ড রয়েছে। এখন থেকে সেখানে থাকবে ৮টি চিতা। কুনো উদ্যানে প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে ৯ টি লেপার্ড রয়েছে। ফলে সেখানে সব শিকার প্রাণীদের সহাবস্থান সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে শিকারের উপস্থিতি থাকতে হবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলে এবং শিকারের উপস্থিতি বজায় রাখা হয় তাহলে ২১ টি চিতা রাখা যেতে পারে।