নয়া দিল্লি: বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি), ফের একবার গান্ধী পরিবারকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর বিতর্কে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কংগ্রেস সরকার ৬০০-রও বেশি প্রকল্পের নাম দিয়েছে নেহরু-গান্ধীর নামে। বিজেপি কখনও নেহরুর নাম না উল্লেখ করলেই হইচই শুরু করে দেয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তারপরও কেন জওহরলাল নেহরুকে সম্মান জানাতে, গান্ধী পরিবারের কেউ তাঁর পদবি ব্যবহার করে না? তিনি বলেন, “আমরা যদি কোথাও নেহরুর নাম নিতে ভুলে যাই, কংগ্রেস অসন্তুষ্ট হয়। একবার আমি একটি কাগজে পড়েছিলাম, দনেহরু এবং গান্ধীর নামে ৬০০টি প্রকল্প রয়েছে। অবাক লাগে, কেন তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁর পদবি ব্যবহার করতে ভয় পায়? নেহরু যদি এতই মহান ব্যক্তি হন, তাহলে কেন তাঁর পদবি ব্যবহার করেন না তাঁরা? কীসের লজ্জা। এই দেশ কোনও পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। ভারত কারোর দাস নয়।” উল্লেখ্য, জওহরলাল নেহরু কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহ।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা দিতে উঠতেই, বিরোধীরা স্লোগান দিতে শুরু করেছিল। ‘মোদী-আদানি ভাই ভাই’, ‘মোদী সরকার শরম কারো’, ‘উই ওয়ান্ট জেপিসি’র মতো স্লোগানের মধ্যেই তাঁর ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, বিরোধীরা যতই তাঁর দিকে কাদা ছুড়বে, ততই বেশি বেশি করে পদ্ম ফুটবে। মাণিক বর্মার কবিতার লাইন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “কিচার উনকে পাস থা, মেরে পাস গুলাল। যো যিস কে পাস থা, উসনে দিয়া উছাল” (ওদের কাছে কাদা ছিল, আমার কাছে আবির। যার কাছে যা ছিল, তারা তা ছুড়ে দিল)।
এদিন তাঁর ভাষণে, পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকার এবং কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রীদের তীব্র আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র। তিনি দাবি করেছেন, মোদী সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে কংগ্রেস তাদের নিজেদের বিতর্কিত বিষয়গুলিকেই খুঁচিয়ে তুলছে। তিনি বলেন, “তারা (কংগ্রেস) বলে যে আমরা রাজ্যগুলিকে সমস্যায় ফেলেছি, কিন্তু ওরা ৯০বার নির্বাচিত রাজ্য সরকারগুলিকে ফেলে দিয়েছে। একজন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত রাজ্য সরকারগুলিকে বরখাস্ত করার জন্য ৫০ বার অনুচ্ছেদ ৩৫৬ ব্যবহার করেছিলেন। তিনি ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।”
এর পাশাপাশি এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে তাঁর সরকারের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতার কী অর্থ, তাও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সরকার বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সকল যোগ্য সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দিয়ে সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে তুলে ধরেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সরকার সত্যিকারের কর্ম সংস্কৃতি তৈরি করেছে। কাজের গতি এবং আকার বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে তাঁর সরকার।