Sourav Ganguly: ‘আমাকে বারবার কেন রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে…’, সৌরভের মুখে বিষণ্ণতার সুর
Sourav Ganguly brand ambassador of Tripura tourism: মঙ্গলবারই ত্রিপুরার পর্যটন বিভাগের ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক গন্ধ আছে কিনা, সেই চর্চা শুরু হয়েছে। আরও একবার তাঁর নামের সঙ্গে রাজনীতির প্রসঙ্গ জড়াতেই দাদার মুখে শোনা গেল বিষণ্ণতার সুর।
কলকাতা: মঙ্গলবারই ত্রিপুরার পর্যটন বিভাগের ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কলকাতায় এসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তারপরই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই কথা ঘোষণা করেন। তবে, তারপর থেকেই এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক গন্ধ আছে কি না, সেই চর্চা শুরু হয়েছে। ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আছে বিজেপি। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠতার জল্পনা চলেছে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন বলে গুজব রটেছিল। তারপর, তাঁর বাড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র আগমনও নয়া জল্পনার জন্ম দিয়েছিল। আরও একবার তাঁর নামের সঙ্গে রাজনীতির প্রসঙ্গ জড়াতেই ‘দাদা’র মুখে শোনা গেল বিষণ্ণতার সুর। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন আমাকে বারবার রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে?”
বুধবার (২৪ মে), এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, “ত্রিপুরা থেকে আমার কাছে এসেছিল। আমাকে সেখানকার পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এর পিছনেও রাজনীতি দেখা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন সবকিছুতে কেন রাজনীতি যোগ করা হচ্ছে? কেরলে সচিন রয়েছে (পর্যটন বিভাগের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর), শাহরুখ কলকাতায় রয়েছে, গুজরাটের সঙ্গে রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, ধোনি ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে। কেন আমার সঙ্গে সব সময় রাজনীতি যোগ করা হয়? এটা আমার কাছে খুব বেদনাদায়ক। কেউ কারও সঙ্গে দেখা করতে পারবে না, কথা বলতে পারবে না? আমি কারওর সঙ্গে কথা বললে, কিছু করলে সব কিছুতেই রাজনীতি যোগ করা হয়। আমি খুব সাধারণ জীবন যাপন করি। আমাকে ত্রিপুরার টুরিস্ট স্পটগুলো প্রোমোট করতে হবে। যদিও এখনও কিছু ফাইনাল হয়নি। কিছু করার আগেই সমস্ত কিছুকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। দয়া করে এটা করবেন না। এগুলোর কোনও গুরুত্ব নেই, কারণও নেই।”
মঙ্গলবারই, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেহালার বাড়িতে এসেছিলেন ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। ত্রিপুরা পর্যটন বিভাগের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডার হওয়ার বিষয়ের পাশাপাশি, আরও বিভিন্ন বিষয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে জানিয়েছিলেন ত্রিপুরার মন্ত্রী। এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যটনকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন এর বহুল প্রচার এবং সঠিক ব্র্যান্ডিং এবং এর জন্য আমাদের দরকার এমন একজন জনপ্রিয় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর যাঁকে সারা বিশ্ব চেনে। ত্রিপুরার পর্যটনকে সরা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে আমাদের সবার প্রিয় দাদা ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আর কে হতে পারে?”
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, ১৯৯০ সালে তিনি প্রথম ত্রিপুরায় খেলতে গিয়েছিলেন। সেই সময় থেকে রাজ্যের অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বিসিসিআই যে তহবিল তৈরি করছে, তাতে ভারতবর্ষের সমস্ত জায়গায় ভাল ভাল স্টেডিয়াম তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে ত্রিপুরার পর্যটন বিভাগের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হলেও, বাংলা থেকেই সবথেকে বেশি ভালবাসা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দাদা। তিনি বলেছেন, “বাংলা আমাকে অনেক দিয়েছে। বাংলা থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। বাংলার মানুষ আমাকে যেভাবে ভালবাসেন, পৃথিবীর কোথাও আমি এত ভালবাসা পাইনি।”