বেঙ্গালুরু: চলন্ত ট্রেনে, চলন্ত বিমান প্রসব (Baby Delivery) করার ঘটনার কথা শোনা যায়। এবার এমনই ঘটনা ঘটল চলন্ত বাসে। আর ওই প্রসবের ঘটনায় সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন খোদ ওই বাসের কন্ড্রাক্টর (Bus conductor)। তিনি অবশ্য এক মহিলা। শুধু প্রসবে সাহায্য করা নয়, আর্থিক দিক থেকেও ওই মহিলার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন ‘দিন-আনা, দিন-খাওয়া’ ওই বাস কন্ড্রাক্টর। তারপর অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সদ্যজাত ও ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোরও ব্যবস্থা করেন তিনি। বর্তমানে মা ও সদ্যজাত- দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। বাসযাত্রী প্রতি এক বাস কন্ড্রাক্টরের এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা সত্যিই নজরকাড়া। সোমবার এমনই অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হয়েছে কর্নাটকের (Karnataka) চিকমাগালুর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলন্ত বাসে সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরু-চাকমাগালুর রুটে কর্নাটক স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (KSRTC)-এর একটি বাসে। ওই বাসের মহিলা কন্ড্রাক্টর এস. বাসান্থামের তৎপরতায় সুস্থভাবে ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন এক যাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে, ঘড়িতে তখন দুপুর ১টা ২৫। বাসটি উদয়পুরা কৃষি কলেজের কাছে পৌঁছেছে। হঠাৎ করেই বাসের এক মহিলা যাত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। ঘটনাটি নজর এড়ায়নি কন্ড্রাক্টর এস. বাসান্থামের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চালককে বাস থামাতে বলেন এবং ওই মহিলা যাত্রী বাস থেকে নেমে হাসপাতালে যেতে পারবেন কিনা জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু, সেই সময় ওই মহিলার বাস থেকে নামার মতো অবস্থা ছিল না। ফলে বাসের মধ্যেই তাঁর প্রসবের বন্দোবস্থ করেন বাসান্থাম। ওই মহিলা যে আর্থিকভাবে দুর্বল, সেটা তাঁর সঙ্গে কথা বলে বাসান্থাম জানতে পেরেছিলেন। তাই তিনি উদ্যোগী হয়ে বাস যাত্রীদের থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা অনুদান তোলেন এবং পুরো টাকা আপৎকালীন খরচের জন্য ওই মহিলার হাতে তুলে দেন। তারপর অ্যাম্বুলেন্স ডেকে ওই মহিলাকে শান্থাগ্রামা হাসপাতালে পাঠান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেন ওই মহিলা কন্ড্রাক্টর। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই ভর্তি সদ্যজাত ও মা। তাঁরা দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এক মহিলা যাত্রীর জন্য বাসান্থামের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন KSRTC-র অধিকর্তা জি.সত্যাবথী। সময়মতো বাসান্থাম এগিয়ে না এলে বিপদ ঘটতে পারত জানিয়ে KSRTC-র অধিকর্তা বলেন, “গর্ভবতীর প্রয়োজনে সাড়া দিয়ে শিশু ও মায়ের জীবন বাঁচাতে ওই মহিলা কন্ডাক্টর সময়মতো যে পরিষেবা দিয়েছেন, তা অত্যন্ত মানবিক ও প্রশংসনীয়।