নয়া দিল্লি: ট্রায়াল শেষ হয়েছে আগেই, অপেক্ষা কেবল কেন্দ্রের ছাড়পত্রের। তবে আর দেরী নয়, আগামী সপ্তাহ থেকেই ভারতের করোনা টিকা(COVID Vaccine)-র বাজারে আসতে চলেছে জ়াইডাস (Zydus Cadilla) সংস্থার করোনা টিকা জ়াইকোভ-ডি (ZyCoV-D)। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচির (National Vaccination Programme) অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে এই নতুন ভ্যাকসিনকে।
জ়াইকোভ-ডি বিশ্বের প্রথম ডিএনএ (DNA Based Vaccine) ভিত্তিক এবং সূচবিহীন করোনা টিকা (Needle Free COVID Vaccine)। ইতিমধ্যেই ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের উপর জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে এই টিকা। তবে এখনও শিশুদের টিকাকরণ নিয়ে কোনও নীতি স্থির না করায়, আপাতত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই এই টিকা ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
জ়াইডাস সংস্থার সূত্রে খবর, কেন্দ্রের তরফে ১ কোটি করোনা টিকার অর্ডার দেওয়া হয়েছে। টিকার প্রতি ডোজ়ের দাম পড়ছে ২৬৫ টাকা। এছাড়া এটি সূচবিহীন টিকা হওয়ায়, এক ধরনের বিশেষ ইন্টারডার্মাল অ্যাপ্লিকেটরের প্রয়োজন টিকা দেওয়ার জন্য। তার জন্য অতিরিক্ত ৯৩ টাকা দিতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে জাইকোভ ডি’র প্রতি ডোজ়ের জন্য খরচ হবে ৩৫৮ টাকা। ইতিমধ্যেই সংস্থা সরবরাহ ও বন্টন শুরু করে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কোভ্যাক্সিন ছাড়া জ়াইকোভ-ডি-ই একমাত্র টিকা, যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত সাতটি রাজ্যে এই নতুন টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই রাজ্যগুলির পিছিয়ে পড়া জেলা, যেখানে টিকাকরণের হার কম, সেখানে এই টিকা দেওয়া হবে। এই সাতটি রাজ্য হল বিহার, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু. উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ।
টিকার গুণগত মান পরীক্ষার পরই হিমাচল প্রদেশের কসৌলির সেন্ট্রাল ড্রাগস ল্যাবরেটরি থেকে প্রথমধাপে আড়াই লক্ষ টিকা সরবরাহের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২০ অগস্ট ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার তরফে জ়াইডাস ক্যাডিলার করোনা টিকা জ়াইকোভ-ডিকে জরিরিভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেয়ে গেলেও এতদিন নানা কারণে এই টিকাকে জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
জ়াইকোভ-ডির সরবরাহ ও বন্টন শেষ হলে জাতীয় টিকাকরণ কর্মসূচির তৃতীয় ভ্যাকসিন হিসাবে এটিকে গণ্য করা হবে। আপাতত কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডই এই কর্মসূচির অংশ।
উল্লেখ্য, এর আগে আহমেদাবাদের এই টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা, তাদের টিকার তিনটি ডোজ় মিলিয়ে ১৯০০ টাকা দাম ধার্য করেছিল। কিন্তু কেন্দ্রের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা এবং দর কষাকষির পর এই দাম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রের খবর, আহমেদাবাদের ওই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা তাদের তিন ডোজ়ের করোনা টিকার জন্য ১৯০০ টাকা দামের প্রস্তাব করেছিল। সংস্থা এবং সরকারের মধ্যে বারবার আলোচনার পরে, ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৮ টাকা, যার মধ্যে একটি ডিসপোজ়েবল জেট অ্যাপ্লিকেটর রয়েছে ৯৩ টাকায়। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, ২৮ দিনের ব্যবধানে তিনটি ডোজ় দিতে হবে।
এখনও অবধি দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ়় পেয়েছে এবং ৫৭ শতাংশ সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত।