আবারও কোটি টাকা উদ্ধার। পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার নগদ প্রায় ১৮ কোটি টাকা। শনিবার ইডির তদন্তকারী দল হানা দেয় নিসার আলি নামে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তারপরই উদ্ধার হয় বান্ডিল-বান্ডিল টাকা। খাটের তলাতেও থরে-থরে সেই টাকা সাজানো ছিল বলে খবর। ইডি সূত্রে খবর, অনলাইনের অনলাইন গেমিং অ্যাপের নামে প্রতারণা চক্র চালিয়ে সেখান থেকে টাকা রোজগার করা হত বলে খবর। হিসাব বহির্ভূত একাধিক সম্পত্তি মিলেছে তাঁর কাছ থেকে।
আবারও শহর দেখল কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ছবি। মাস তিনেক আগে হরিদেবপুরে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল বিপুল পরিমাণে টাকা। পরের দিন ইডির তরফে ট্রাঙ্কে ভরে সেই টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ট্রাক বোঝাই করে। শনিবার সন্ধ্যাতেও সেই ছবির পুনরাবৃত্তি। টাকা গোনার মেশিন এনে দিনভর চলল গণনা। সন্ধ্যায় যখন গণনাপর্ব সমাপ্ত, ইডি সূত্রে জানা গেল, আমির খান নামে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকার পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটিতে থেমেছে। এখনও অবধি সূত্রের খবর, ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পেয়েছে ইডি। অর্থাৎ আমিরের নগদের আমিরি আপাতত এ পর্যন্তই। তবে এরপর তদন্ত কোন দিকে মোড় নেবে, এমনই চাঞ্চল্যকর আরও কোনও কিছু অপেক্ষা করছে কি না তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
সবিস্তারে পড়ুন: খাটের নীচেই ১৮ কোটি! এরপর কি আরও চমক দেবেন গার্ডেনরিচের আমির? মুখিয়ে রাজ্যবাসী
টাকা তুলতে নিয়ে আসা হল ট্রাক। ভিতরে রাখা ১০টি ট্রাঙ্ক। বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে এলাকায় ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ
গার্ডেনরিচে নাসের আহেমদ খান নামে এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এখনও পর্যন্ত সাত কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার হয়েছে। টাকা গোনার কাজ এখনও চলছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নাসের খানের ছেলে আমির খান। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি এফআইআর করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই এদিন কলকাতার ছয় জায়গায় হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পৃথক পৃথক দল। ইডি জানিয়েছে, ‘ই-নাগেট’ নামে একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল নাসেরের ছেলে আমির খান।
বিস্তারিত পড়ুন: Enforcement Directorate: কে আমির খান? কীসের অ্যাপ? কেমন করে চলত প্রতারণা? জানুন আগাগোড়া
আজ সকালে গার্ডেন রিচে পৌঁছন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তল্লাশি চালায়। সেই সময় মেলে খাটের তলা থেকে পাঁচশ ও দু’হাজারের বান্ডিল-বন্ডিল নোট। ম্যানুয়ালি ৭ কোটি টাকা গোনা হয়। তারপর আসে ৮টি টাকা গোনার মেশিন। কাউন্টিং চলছে।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘তৃণমূলের রাজত্বে পশ্চিমবঙ্গে আপনি যেখানে হাত দেবেন সেখানেই টাকা পাবেন। বাংলায় কালো টাকা উড়ে বেরাচ্ছে। খাটের তলায় এখন কোটি-কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। কখনও মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি, কখনও মাছ ব্যবসায়ী কখনও আবার অপার টাকা উদ্ধার হচ্ছে। ওদিকে আবার অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তির পর সম্পত্তি পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে যে লুঠের রাজত্ব এবং সেই ভাগাভাগি কে কতটা পাচ্ছে তার তর্ক-বিতর্ক করে লাভ নেই। গোটা বাংলার সর্বনাশ হয়ে গেছে। যে বাংলা সংস্কৃতীর দিক থেকে এগিয়ে ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে সেই বাংলার কী অবস্থা হয়ে গিয়েছে।’
বিস্তারিত পড়ুন: Garden Reach Money Recover: কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে : ফিরহাদ
টাকা উদ্ধারের ঘটনায় মন্তব্য করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘ ‘আইটি রেড, ইডি রেড করে বোঝাতে চাইছে ব্যবসা বাংলায় করো না। ব্যবসা করতে গেলে আমাদের রাজ্যে চলে এসো। এখানে থাকলে আমরা এইভাবে ব্যবসায়ীদের আক্রান্ত করব। এর মাধ্যমে বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।’
বিস্তারিত পড়ুন: Garden Reach Money Recover: কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে : ফিরহাদ
শুক্রবার প্রতারণা নিয়ে সরব হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। একটি বৈঠক ডাকেন তিনি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব, আরবিআই-এর প্রতিনিধি এবং অন্যান্যরা। ওই বৈঠকে একটি ত্রিস্তরীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথমত, ইডি অভিযান চালাবে। দ্বিতীয়ত, যাদের জড়িত পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃতীয়ত, এগুলি কীভাবে বন্ধ করা যায়।তারপরই ইডির অভিযানে এই বড়সড় সাফল্য।
বিস্তারিত পড়ুন: Enforcement Directorate: ভুয়ো ডিজিটাল লোন অ্যাপ নিয়ে নির্মলার কড়া বার্তার পরই কলকাতায় উদ্ধার কোটি কোটি টাকা