কলকাতা: রাজ্যে কিছুটা কমেছে করোনা (Corona) সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টার করোনা বুলেটিন অন্তত এমনটাই বলছে। তবে কয়েকদিনে মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বিশেষজ্ঞদের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৩৭। এখানেই শেষ নয়, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আরও একটি বিষয়। পরিসংখ্যান বলছে দৈনিক করোনা মৃত্যুতে শীর্ষে এম আর বাঙুর। রাজ্যের প্রথম কোভিড হাসপাতালে গত ছ’দিনে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এম আর বাঙুরের পরে মৃত্যুর নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মেডিকা। এরপর তালিকায় আরও দু’টি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। একদিকে সাগর দত্ত ও অন্যদিকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ। মৃত্যুর সংখ্যায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে সিএনসিআই-রাজারহাট।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য-ভবনের তরফে হাসপাতালের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন দিন-দিন বেড়েছে মৃত্যু হার! এই বিষয়ে এমআর বাঙুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে সত্তরটি আইসিইউ বেড রয়েছে। সেখানে যে সকল রোগী রয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন। তাছাড়া টার্শিয়ারি ও অন্যান্য হাসপাতাল থেকেও এম আর বাঙুর হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেরই বয়স বেশি। হাসপাতালের তরফ থেকে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁদের।
কিন্তু কেন বাঁচানো যায়নি ওই রোগীদের? কী বলছে হাসপাতাল?
সূত্রের খবর, যেহেতু রোগীদের বয়স অনেকটাই বেশি তার উপর হাসপাতালে যখন তাঁদের ভর্তি করানো হয়েছে তখন তাঁদের শারীরিক অবস্থা অনেকটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি বেশির ভাগেরই রয়েছে অন্যান্য অসুখ। তাই ভাইরাস এইবার ফুসফুসে আঘাত না করলেও অনেক রোগী আছেন যাঁদের হাসপাতালে আসতে দেরী হয়েছে অবস্থা টেস্ট করাতে দেরী হয়েছে। তার ফলেই এই মৃত্যু বেড়েছে।
এই বিষয়ে এম আর বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর জানিয়েছেন, ছয়দিনে পনেরো জনের মৃত্যু হয়েছে কারণ অধিকাংশই আইসিইউর রোগী। পাশপাশি অন্যান্য হাসপাতাল থেকেও স্থানান্তরিত করে বাঙুরে আনা হয়েছে। প্রচুর রোগী রয়েছেন যাঁদের কো-মর্বিডিটি আছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ার পরেও এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি এমন রোগীও আছেন যাঁদের করোনা পরীক্ষাও অনেক দেরীতে করা হয়েছে। তবে হাসপাতালের তরফে যথেষ্ঠ চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও তাঁদের বাঁচানো যায়নি। অন্যদিকে, আরজিকর-এর ডেপুটি সুপার ত্রিদিপ মুস্তাফি জানিয়েছেন, যারা মারা গিয়েছেন তাঁদেপ বেশির ভাগ রোগীর বয়স হয়েছে সঙ্গে তাঁদের আরও অসুখ ছিল সেই কারণেই বাঁচানো যায়নি।
একা শুধু বাঙুর নয়। এই ছবিটা ধরা পড়েছে আরও কয়েকটি হাসপাতালেও। বাঙুরের পর এখনও পর্যন্ত মেডিকাতে ছয়দিনে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাগর দত্তে সেই সংখ্যাটা ১২। আরজিকর হাসপাতালে ১১ জন মারা গিয়েছেন। সিএনসিআই-রাজারহাটেও মৃতের সংখ্যা ১১। অ্যাপেলোতে ছয়দিনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।
আরও পড়ুন: Covid Bulletin: কলকাতায় কমল মৃত্যু, রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণও নিম্নমুখী