সদ্য শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। জয়ের আবহেই এবার ২১ জুলাই পালন করছে তৃণমূল। তবে ভোট চলাকালীন যে সব কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের কথা মাথায় রেখে এবার ‘শহিদ দিবসে’র পাশাপাশি ‘শ্রদ্ধা দিবস’ পালন করছে তৃণমূল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ধর্মতলার দিকে আসতে শুরু করেছেন। অনেকেই একদিন বা ২ দিন আগে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন বৃহস্পতিবার।
১০০ দিনের কাজ নিয়ে বারবারই সরব হয়েছেন মমতা সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। মঞ্চ থেকে মমতা জানালেন, এবার বাংলার সরকারের টাকাতেই যাতে ১০০ দিনের কাজ হয়, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মমতা সেই স্কিমের নাম দিতে চান, ‘খেলা হবে।’ যতদিন পর্যন্ত কেন্দ্র টাকা না দেবে, ততদিন পর্যন্ত জব কার্ড হোল্ডারদের সেই কাজ দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
মমতা উল্লেখ করেন, মৃতদের মধ্যে ১৮ জন তৃণমূলের, বিজেপির ৩ জন ও সিপিএমের ৩ জন রয়েছে। তাঁর দাবি, বিজেপি ঘটনা সাজিয়ে দিতে চাইছে। ভিডিও করে বাংলাকে অসম্মান করার চক্রান্ত করা হতে পারে বলেও দাবি মমতার।
মমতা বলেন, ‘ভোটের দিন ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোটের আগে থেকে আজ পর্যন্ত মোট ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ১৮ জন তৃণমূলের কর্মী। তৃণমূল কি তৃণমূলকে খুন করবে?’ ভোট-হিংসা নিয়ে মমতা বলেন, ভাঙড়, চাপড়া আর কোচবিহারেই শুধু গণ্ডগোল হয়েছে।
২৪-এর আগে একটা জোট তৈরি করতে পেরে আমি খুশি। সব লড়াই সেই জোটের ব্যানারে হবে। আমাদের কোনও চেয়ার তাই না। আমরা চাই দেশ থেকে বিজেপি বিদায় নিক: মমতা
‘মহিলাদের ক্ষতি করলে, জেনে রাখুন, আগামী নির্বাচনে মহিলারাই আপনাদের ক্ষমতাচ্যুত করবে।’ মণিপুর ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে ফের একবার সরব অভিষেক। দাবি আদায়ের জন্য দিল্লি যাওয়ার ডাক দিলেন তিনি। বেছে নিলেন গান্ধী জয়ন্তীকে। ২ অক্টোবর ট্রেনে চেপে দিল্লি যাবেন, জানালেন অভিষেক।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘গান্ধী জয়ন্তীকে দিল্লি চলো…’ একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডাক দিলেন অভিষেক
ব্লকে ব্লকে কতজন বিজেপি নেতা আছে, তার তালিকা তৈরি করুন। ৫ অগাস্ট, শনিবার শান্তিপূর্ণভাবে সেই নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করতে হবে। কারও গায়ে হাত দেবেন না। গণ ঘেরাও করুন: অভিষেক।
‘বিরোধীদের কাছে সব আছে, মানুষ নেই। আর তৃণমূলের কাছে কিছু নেই, মানুষ আছে। পঞ্চায়েত ফলাফলের হিসেব দিয়ে বললেন অভিষেক।’ বিজেপিকে সরাতে বিরোধী জোট যে বদ্ধপরিকর, সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ”নির্বাচনে জিতছে কে? INDIA আবার কে’। বকেয়ার দাবি নিয়ে আরও একবার সাধারণ মানুষকে দিল্লি যাওয়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই, তাঁরা রক্ষকের বেশে ভক্ষক। এই ভাষাতেই বিরোধীদের আক্রমণ করলেন তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ।
একুশের মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ছাত্রনেত্রী রাজন্যাকে বেছে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে দিল্লি জয়ের ডাক দিলেন তিনি।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘তোমাদের কাছে আছে সিবিআই-ইডি, আমাদের আছেন দিদি’, একুশের মঞ্চে নজর কাড়লেন রাজন্যা
কলকাতায় আসা হয় না সবসময়, হয়ত বছরে এই একবারই। তাই শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের ভিড়।
বিস্তারিত পড়ুন: মাঠ ফাঁকা, গ্যালারিতে ‘দর্শক’, স্কোর বোর্ডের মাথাতেও ভিড়- নজিরবিহীন দৃশ্য ইডেন গার্ডেন্সে
ফি বছর ২১ জুলাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত দায়িত্বভার দলনেত্রী ন্যস্ত করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। এবার সে ছবিতে বদল। সবিস্তারে পড়ুন: স্নান সেরে ৩ রকমের সুগন্ধি মেখে এতক্ষণে ২১-এর মঞ্চে হাজির পার্থ, তবে আজ…
সকাল থেকে কাতারে কাতারে মানুষ ধর্মতলামুখী। দলের বিরুদ্ধে ওঠা কোনও অভিযোগ মানতে নারাজ তারা। সবিস্তারে পড়ুন: ‘দুর্নীতির অভিযোগ, ও সব ফালুত কথা’, গঙ্গাস্নান সেরে ধর্মতলামুখী তৃণমূল কর্মীরা
শুক্রবার সকাল থেকে দেখা নেই বাসের। রাস্তায় বেরিয়ে চরম অসুবিধার মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। এদিকে, সরকারি বাসগুলি তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে ধর্মতলায়।
বিস্তারিত পড়ুন: অঘোষিত ‘ছুটি’ কলকাতায়! ধর্মতলামুখী শয়ে শয়ে সরকারি বাস, বিপাকে নিত্যযাত্রীরা
উত্তীর্ণ বা করুণাময়ী, যেখানে যেখানে তৃণমূল কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানেই সকাল সকাল খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। ডিম সিদ্ধ, ডাল, ভাত পেট পুরে খাওয়ানো হচ্ছে কর্মীদের। এরপরই সভাস্থলের দিকে রওনা হবেন তাঁরা।
বিধাননগরের দত্তাবাদ অঞ্চল থেকে ধর্মতলার দিকে রওনা হলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। পরণে সাদা শাড়ী আর হাতে প্রতীকী ভাণ্ডার নিয়ে এগোচ্ছেন মহিলারা। রাজ্যের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর নাম লেখা ভাণ্ডার রয়েছে তাঁদের হাতে। বিধাননগরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলো দত্ত এবং এই ওয়ার্ডের প্রেসিডেন্ট নির্মল দত্তের নেতৃত্বেই এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা যাচ্ছেন ধর্মতলা দিকে। বসিরহাটের মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদ সহ একাধিক এলাকা থেকে নদী পার হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গৌড়েশ্বর, বেতনী, ইছামতি ও কলাগাছি নদী পার হয়ে মালঞ্চ, ধামাখালি ও লেবুখালি সহ একাধিক পয়েন্টে পৌঁছচ্ছেন কর্মীরা। তারপর সেখান থেকে ট্রেনে বা বাসে করে চলেছেন কলকাতার দিকে। স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া ও বসিরহাট ১ নম্বর ব্লক বহু মানুষ টাকি রোড, বাসন্তী হাইওয়ে ধরে ধর্মতলার দিকে এগোচ্ছেন।
প্রায় তিন দশক ধরে ২১ জুলাই পালিত হচ্ছে ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে। ১৯৯৩ সালে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তিনি ছিলেন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। সেই অভিযান চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। গুলি চালায় পুলিশ। ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল সে দিন। আজও সেই দিনটিকেই ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করেন মমতা।