সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ২৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে হচ্ছে ছাত্র পরিষদের সমাবেশ। সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস সহ একাধিক নেতৃত্ব।
‘নাসা থেকে ভাসায় ভারতের ছেলে মেয়ে বেশি। আর এই দেশেই এখানকার লোকেরা পরাধীন। এখানে স্বাধীনতা শুধু বিজেপি-র।’
‘একটা বিল আনব। তারপর ইলেকশান করব। আমরা যখন ছাত্র রাজনীতি করেছি তখন সিপিএম বোমা বন্দুক নিয়ে তাড়া করেছে। বসন্ত কেবিনের ছেলেরা আমায় ঢুকিয়ে নিয়েছিল। ওরা গুন্ডামি করবে বলে তোমরা করবে না। বিচার চাও র্্যাগিংয়ের। আমি পুলিশকে বলেছি গোলি মারও স্লোগান যারা দিয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। আগামী দিন নির্বাচন শান্তি প্রিয় ভাবে করবেন। এখন নতুন লাল হয়েছে। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি এখানে লালে লাল হয়েছে। ওরা গণ্ডগোল করলে আটকাবেন। যে স্টুডেন্টারা পড়ে তারাই ভোট দেবে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করবেন।’
‘আমায় কালকে একজন মেসেজ দিচ্ছেন অভিষেককে গ্রেফতার করব নির্বাচনের আগে। ওর কম্পিউটারের সব তথ্য নিয়ে গিয়েছে। তারপর কতগুলো ফাইল নিজেরা তৈরি করে নিয়ে গিয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরাও কম ওস্তাদ নই। আমরাও সব তথ্য বের করে নিয়েছি। এগুলো তোমরা ঢুকিয়েছ। এগুলো ওদের কম্পিউটারে ছিল না। এমনকী ডায়রি করা হয়েছে।’
‘এখন মাথার উপর ছাতা রয়েছে। ওনার চেয়ারকে সমর্থন করি। কিন্তু ব্যক্তি হিসাবে কার্যকলাপ মানতে পারি না। উনি সংবিধান উলঙ্ঘিত করছেন। সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টালমাটাল অবস্থা। নিজের বন্ধুকে ভিসি করছেন। আইপিএসকে ভিসি করছেন। অথচ যিনি কোনও দিন প্রফেসারির ট্রেনিংই নেননি। তাঁকে ভিসি করেছেন। যাদবপুরে বিজেপি সেলের প্রেসিডেন্টকে বসিয়েছে ভিসি করে। এটা কি মগের মুলুক? আপনার এক্তিয়ারে আমরা যাই না, আপনিও আসবে না আমাদের এক্তিয়ারে। আপনি আর মুখ্যমন্ত্রী এক নয়। আপনি মনোনিত আর আমরা নির্বাচিত। আর নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে পাঙ্গা নেওয়ার চেষ্টা করছে না। আমি শুনতে পাচ্ছি এখান থেকে ওইখান থেকে লোক নিয়ে আসা হচ্ছে। এবং রাজভবনে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে কল যাচ্ছে। যাকে ইচ্ছা ডেকে পাঠাচ্ছে। ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করছে দুর্নীতি বলতে পার? ‘
‘মুর্শিদাবাদ-মালদা-উত্তর দিনাজপুর এরা কনস্ট্রাকশন ওয়ার্ক ভালো করে। কিছু দালাল এদের নিয়ে বাইরে চলে যায়। রেলের কাজে যে ৩৪ জনকে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ২৪ জন মারা গিয়েছে। আমরা সেই কনডাক্টরকে ডাকব যে ওদের নিয়ে গিয়েছিল। জিজ্ঞাসা করব নিরাপত্তা ছাড়াই কীভাবে নিয়ে গেল?’
‘আমরা সবুজ বাজি কারখানা তৈরি করে দিচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হয়ে আছে। তাও বৈআইনি কাজ করে। ইট ভাটাগুলোর ,পাথর চুরি, ভেড়ির আইন করেছি। সুবজ বাজি তৈরি করুন। এতে টাকা আয় কম হবে। কিন্তু জীবন বাঁচবে। পরশু দিনও তিনজন শ্রমিককে নিয়ে আসা হল। তার আগে মালাদার শ্রমিক মারা গেল, তার আগে রেল দুর্ঘটনায় মারা গেল। এই শ্রমিকরা মারা যাচ্ছে উত্তর প্রদেশে গুজরাটে মারা যাচ্ছে। ওরা বাইরে কাজে গেলেই বলবে এখানে কাজ নেই তাই যায়। এখানে তো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তাহলে ছেলে মেয়েরা কেন বাইরে পড়তে যায়? যার ক্ষমতা আছে সে যায়। তাকে আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষায় নম্বর ওয়ান।’
‘অপরাধীরা অপরাধ করছে। আর চোখ বুজে পুলিশ দেখছে। সব পুলিশ নয়। আমি যেমন অ্যান্টি র্যাগিং তৈরি করেছি তেমন অ্যান্টি কোরাপসন সে তৈরি করেছি। আমরা নজর রাখছি দেখার জন্য। আইন না থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ থেকে কেন টাকা নেবেন?’
‘ধূপগুড়ির উপ নির্বাচনের জন্য শুনলাম বিজেপির লোকজন সব হোটেল বুক করে নিয়েছে। আমাদের লোক ওখানে গিয়ে থাকবে তার উপায় নেই। ওরা ভাবে টাকা দিয়ে সব হবে। সাংবাদিকদের আমি দোষ দিই না। সকালবেলায় বিজেপি-র পার্টি অফিস থেকে বলে দেওয়া হয় এটা চালাবে। বিজেপি জিতছে এই করেছে ওই করেছে এটা চলেছে। যারা লিখছেন তাদের ঘর আমি যদি খুলি। তারা কাদের থেকে টাকা নেন সেই তদন্ত যদি করি তাহলে দেখিয়ে দেব রাজনৈতিক নেতারা একা টাকা কালেকশন করে না। সাংবাদিকরা কালেকশন করে।’
‘আমি হাজরায় মিছিল করছি। ঘিরে ফেলল লোহার তার দিয়ে। পুরো জায়গা খালি করল। কল্যাণ বলেছে আমায় মারছিল। যাতে কেউ না আসতে পারে। আমায় তাড়া করেছে। আমি পড়ে গেলাম একা। আমার সঙ্গে যারা ছিলেন সকলে মারা গিয়েছে। প্রথমে ডান্ডা মারল। কিন্তু আমার লাগেনি। আমি ভাবছি পুলিশের ডান্ডা পেল কোথা থেকে। এরপর তৃতীয়বার মাথায় মারল। এত মেরেছে আমার হাত থেঁতলে গিয়েছিল। একদিন রটে গিয়েছিল আমি মারা গিয়েছি। পার্লামেন্ট অ্যাডজর্ন হয়ে যায়। একুশে জুলাই কোমরে পেরেছে। আমার চোখে অসুবিধা হয়। সারা শরীর আমার ভগ্ন। আমি জিন্দা লাস হয়ে বেঁচে রয়েছি। কিন্তু আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম সিপিএম-কে সরাবো। আজ আমার লড়াই বিজেপিকে দিল্লি থেকে সরাবো’
‘কংগ্রেস করতাম। একদিন দেখলাম কংগ্রেস সিপিএম এর সঙ্গে আঁতাত করে এমন অবস্থা করল একুশে জুলাইয়ের তেরো জন শহিদ মারা গেল। কংগ্রেস একটা লোক পাঠাল না। তদন্ত করল না। আমতার কান্দুয়ায় হাত কেটে দেওয়া হল লোক পাঠাল না, মেমারিতে চারজন নাকশাল নেতাকে কুচি-কুচি করে খুন করা হয়েছিল একটা লোককেও পাঠায়নি। আমি হলদিয়ায় মিটিংয়ে গিয়েছিলাম আমাদের মাইক দেওয়া হয়নি। এমনকী চা কলকাতা থেকে নিয়ে গিয়েছি। চমকাইতলায় আমরা স্টেজ বেঁধেছি। মিটিং এর অজিতদাকে আটকে দিল রাস্তায়। চারিদিকে চলছে গুলি। আমি বললাম চালাও গুলি আমি কেয়ার করি না।’
‘আমি ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। আমি দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি করেছি। ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে আমি দুধের ডিপোতে কাজ করেছি। সেই টাকা আমি ব্যানার পোস্টার দরিদ্র লোকের জন্য খরচ করতাম। বিএ পার্ট ওয়ান পরীক্ষার দিন ডান হাতের বুড়ো আঙুল বোতলে খ্যাচ করে ঢুকে যায়। তাই নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের কলেজ ছিল ছটা পনেরোয়। আমরা ভোর চারটেয় উঠতাম। আমার সঙ্গে লড়াইয়ে ছিল ডিএসও। ওরা অনেকে টানবার চেষ্টা করেছে। আমি কী করে যাব। আমার বাবা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁর কাছে গল্প শুনে শুনে আমার মনটাই স্বাধীনতা আন্দোলনে জাগরিত হয়েছিল। তাই অন্য কোনও দলে যেতে পারিনি।’
‘যাঁরা কথায়-কথায় হাইকোর্টে যায়। বলে সিসিটিভি লাগাতে হবে বুথে। তারা বলছে কলেজ চত্বরে সিসিটিভি লাগানো যাবে না। আসলে এটা বংশগত পরম্পরা। এদের দাদুরা কম্পিউটারের বিরুদ্ধে, বাবারা ইংরেজির বিরুদ্ধে, ছেলেরা সিসিটিভির বিরুদ্ধে। আমরা সিসিটিভি লাগাবোই। কোনও পড়ুয়ার প্রাণ যাবে না।’
‘আমি নেত্রীকে বলব আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। কেশ স্পর্ষ করার ক্ষমতা বিজেপি-র নেই। তার আগেই তৃণমূল যুবর উপর দিয়ে লড়াই করে আপনার কাছে পৌঁছতে হবে।’
‘আজ নতুন অঙ্গীকার র্যাগিং মুক্তি ক্যাম্পাস গড়ে তুলব। আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই অ্যান্টি র্যাগিং হেল্প লাইন চালু করেছে। সেটা সারা বাংলায় প্রযোজ্য।
‘মিডিয়ার লোকজন তদন্ত করে না। মানুষকে কলুষিত করেন। এটা র্যাগিং নয়? কোনও বাপের ব্যাটা থাকলে বলুক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে মৃত্যু বরণ করেবে।’
‘আমাদের ধমকে লাভ নেই। আমি যেদিন ফিরলাম। তার পরের দিন ইডিকে পাঠিয়েছে রেড করতে। তল্লাশি করেছে তার সঙ্গে সঙ্গে ষোলাটা ফাইল কম্পিউটারে ডাউনলোড করে দিয়ে চলে এসেছে। আমি বলছি এই ফাইলটাই যদি কয়েকদিন পর ইডি সিবিআই পেত তাহলে এই সংবাদ মাধ্যম বলত অভিষেকের অফিস থেকে কলেজের লিস্ট পাওয়া গিয়েছে।’
‘আমি চিকিৎসার জন্য বাইরে গিয়েছি। সংবাদ মাধ্যমে এমন হাওয়া তোলা হল আমি নাকি ফিরব না। আমার পদবি মোদী নয়, আমার পদবী বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথা উঁচু করে লড়তে জানি। মাথা নীচু করে দিল্লির কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে জানি না। প্রথম শ্রেণির সংবাদ মাধ্যমেও মিথ্যে কথা পরিবেশন করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রমাণ থাকে ইডি সিবিআই নয়।ফাঁসির মঞ্চ করো। প্রাণ দেবো’
‘মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক ভাবে পঞ্চায়েত জিতেছি। বিরোধীরা বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে।’
‘বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমায় বনগাঁয় ঠাকুর বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। ওদের অনুমতি নিয়ে মন্দিরে ঢুকতে হবে। সুব্রত ঠাকুর নিজের বুথে হেরেছে। দিলীপ ঘোষ নিজের বুথে হেরেছে। বিজেপি রাজ্যসভাপতি নিজের বুথে হেরেছে। শুভেন্দু অধিকারী পুরসভা ভোটে নিজের বুথে হেরেছেন।’