কলকাতা : দেশব্যাপী তিনদিনের রেশন বনধ-এর (Ration Bandh) ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে রেশন বনধ। এরপর কেন্দ্রীয় নীতির প্রতিবাদ ও ১১ দফা দাবিকে সামনে রেখে ২২ মার্চ ‘সংসদ চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে রেশন ডিলারদের (Ration Dealer) সংগঠন। যা নিয়ে চাপানউতর চলছে এ রাজ্যেও। বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে বাংলায়। কোনও কোনও জেলায় বন্ধ রইল রেশনের দোকান, আবার কোথাও কোথাও বনধের কোনও প্রভাবই পড়ল না। সূত্রের খবর, এ রাজ্যের মোট ২০ হাজার ২৮১ জন রেশন ডিলারের মধ্যে ফেডারেশনের অধীনে থাকা ১৭ হাজার ১২১ জন ডিলার আজ দোকান খোলেননি। অর্থাৎ রাজ্যের প্রায় আট কোটি উপভোক্তা আগামী ৭২ ঘণ্টা এই সমস্ত ডিলারদের কাছ থেকে রেশনের সামগ্রী পাবেন না।
এদিন সকাল থেকেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রেশনের সমস্ত দোকানই প্রায় বন্ধ ছিল। দোকানের সামনে ঝুলতে দেখা গেল ১১ দফা দাবির পোস্টার। খানিক একই ছবি দেখতে পাওয়া গেল হাওড়াতেও। প্রথম দিনেই হাওড়াতে বন্ধ অধিকাংশ রেশন দোকান। দোকান বন্ধ এবং বাইরে ধর্মঘটের সমর্থনে লাগানো পোস্টার দেখে ফিরে গেলেন গ্রাহকরা। তবে বনধের সেই অর্থে কোনও প্রভাবই পড়ল না দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায়। ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় ৩৮৭ ও কাকদ্বীপ মহকুমায় ১৬০টি রেশন দোকানে স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। সকাল থেকে যথারীতি দুয়ারে রেশন নিয়ে হাজির হয়েছেন ডিলাররাও। ডায়মন্ড হারবারের পাশাপাশি সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগরেও দেওয়া হয়েছে রেশন।
রেশন ডিলারদের ক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রত্যাহার করে নেওয়াকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে রেশন ডিলারদের প্রায় ৪৮৪ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। রেশন ডিলারদের এই ক্ষতির ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য রেশন ডিলারদের মাসে ৫০ হাজার টাকা করে সাম্মানিক দেওয়া হয়, সেই দাবিও তোলা হয়েছে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে রেশনের মাধ্যমে ডাল, তেল, চিনি সরবরাহের দাবিও তোলা হয়েছে। এরকমই একগুচ্ছ দাবিকে সামনে রেখে ডাক দেওয়া হয়েছে ৭২ ঘণ্টার বনধের।
রাজ্যের পাশাপাশি দেশের মোট ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার রেশন ডিলারও এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের কাছ থেকে দাবি নিয়ে ইতিবাচক সাড়া না মিললে আগামি ২২ মার্চ পার্লামেন্ট অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে।