অভিষেক ২.০: ২০ বছর মন্ত্রিত্ব চান না, তা হলে কী চাইছেন তৃণমূল সাংসদ?

বিজেপির তরফে তাঁর নতুন পদপ্রাপ্তি এবং উত্থান ঘিরে যে আক্রমণ বারবার করা হচ্ছে, সেই প্রত্যেক আক্রমণের জবাব এ দিন বেছে বেছে দিয়েছেন তিনি।

অভিষেক ২.০: ২০ বছর মন্ত্রিত্ব চান না, তা হলে কী চাইছেন তৃণমূল সাংসদ?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 07, 2021 | 8:00 PM

কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনের শুরু আগেও নামটা এতটা প্রাসঙ্গিক ছিল না জাতীয় রাজনীতিতে। কিন্তু ভোটের প্রচারপর্বে খোদ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আপামর বিজেপি নেতাদের ভাষণে কয়েক হাজার বার ‘ভাইপো’ কটাক্ষের বদন্যতায় এখন তিনিই হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ঘোষিত ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’। অভিষেকের যদিও ব্যক্তিগতভাবে এই তকমা অপছন্দের। তিনি দলের কর্মীদেরকেই দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ মনে করেন। তবে বিজেপির তরফে তাঁর নতুন পদপ্রাপ্তি এবং উত্থান ঘিরে যে আক্রমণ বারবার করা হচ্ছে, সেই প্রত্যেক আক্রমণের জবাব এ দিন বেছে বেছে দিয়েছেন তিনি।

এ যেন অভিষেক ২.০

নির্বাচনের আগে এক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেছিল রাজ্য। যিনি অধিকারী গড়ে প্রচারে গিয়ে ভাষণের সময় এমন কিছু আপত্তিকর শব্দ প্রয়োগ করেছিলেন যা পরবর্তী সময় বিজেপির হাতিয়ার হয়ে ওঠে। কিন্তু ভোটের পর থেকে যেন দেখা যাচ্ছে অন্য এক অভিষেককে। যার শব্দচয়ন, কথা বলার ভঙ্গিমা, বিরোধীদের আক্রমণ করার সীমা-পরিসীমা এবং শরীরী ভাষার মধ্যেই এক নতুনত্ব, দায়িত্বশীলতা এবং আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া মিলছে। সোমবার তোপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করতে বসে নরেন্দ্র মোদী থেকে শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, এমনকি ৮ দফায় ভোট করার জন্য নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেন তিনি। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সেই সমালোচনার মাত্রা ছিল তীব্র, অথচ পরিমিত। সবদিক দিয়েই যেন এক নতুন অভিষেকের আত্মপ্রকাশ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মতে, সর্বভারতীয় স্তরে ভূমিকা নেওয়ার স্বার্থেই অভিষেকের এই নতুন সংশোধিত সংস্করণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

আগামী ২০ বছর মন্ত্রিত্ব থেকে দূরে

২০২৪ সালে মমতা সরাসরি মোদীর সঙ্গে টক্কর নেবেন। আর এ রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব তিনি তুলে দেবেন অভিষেকের কাঁধে। তৃণমূল বিরোধীদের মনে এমন একটা চালু ধারণা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। আজ সেই ধারণাও ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তিনি পষ্টাপষ্টি জানিয়েছেন, আগামী ২০ বছর তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে দূরে থাকবেন।

তৃণমূলের মিশন ২০২৪

প্রচারে নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, বাংলাই দেশকে পথ দেখাবে। তৃণমূলের বঙ্গ বিজয়ের ফলে দিল্লিকে পাখির চোখ করা সেই পথ যে প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই। এই প্রসঙ্গেই অভিষেককে বলতে শোনা যায়, বাংলার লড়াই গোটা দেশে আশা দেখাতে শুরু করেছে। তবে কবে থেকে কোন রাজ্যে তৃণমূল প্রভাব বিস্তার করা শুরু করবে তা এ দিন খোলসা করেননি অভিষেক। আগামী এক মাসের মধ্যে সেই পরিকল্পনাও খুলে বলা হবে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্বে অনিহা অভিষেকের, কবে থেকে শুরু হচ্ছে ‘মিশন ২০২৪’? জানালেন নিজেই

মন্ত্রিত্বে না, তবে ঠিক কী চাইছেন অভিষেক?

মন্ত্রিত্ব চাইছেন না অভিষেক। তা হলে ঠিক কী চাইছেন প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, অভিষেককে আগামীতে আর রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ মাথা ঘামাতে দেখা যাবে না। বরং একাধিক রাজ্যে তিনি তৃণমূলের সংগঠন বৃদ্ধি এবং ভোট রাজনীতির ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করবেন। ওয়াকিবহাল মহলের আরেকটি অংশের মতে, যে মোদী-শাহ ভোটের সময় লাগাতার অভিষেককের বিরুদ্ধে আক্রমণে শান দিয়েছিলেন, সেই অভিষেকই দিল্লিতে এ বার মুখ্য বিরোধী ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। যেহেতু গত ৭ বছরে রাহুল গান্ধী নিজেকে সেভাবে বিরোধী মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে উঠতে পারেননি, সেই কারণে বিকল্প বিরোধী মুখ হওয়ার চেষ্টা চালাতে পারেন অভিষেক।

আরও পড়ুন: সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন, নভেম্বর পর্যন্ত নিখরচায় রেশন: মোদী