কলকাতা: বরাবরই ভোটের আগে আদি-নব্য নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়েছে। বিভিন্ন জেলাগুলিতে প্রবীণ-নবীনদের মধ্যে ঝামেলা নতুন কিছু নয়। আজ অভিষেক এই মর্মেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উড়ে যাওয়ার আগে প্রবীণদের নিয়ে সোজাসাপটা তৃণমূল সাংসদ। বললেন, “দলে প্রবীণদের প্রয়োজন। তবে বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও থাকা দরকার।”
সোমবার অভিষেকের এই বক্তব্যের পর উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কি বয়সের উর্ধ্বসীমা বেধে দেওয়া হবে? তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদরা রয়েছেন তাঁদের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে কি জিজ্ঞাসা চিহ্ন রইল? নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব ঘাসফুল শিবিরের আজকের নয়। ‘নতুন তৃণমূলের’ সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ‘পারফর্মেন্স’-এর উপর জোর দিয়েছিলেন ‘তৃণমূল সেনাপতি’ বলেছিলেন, “বয়সের নীরিখে নবীন-প্রবীণ নয়, পারফর্মেন্সের নিরিখে যাঁরা যোগ্য তাঁদের প্রার্থী করা হবে। এটাই নতুন তৃণমূলের সংজ্ঞা।”
আজ অভিষেক বলেছেন, “শুধু দল বলে নয়,আমি মনে করি যে কোনও জায়গায় ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার। যে পরিশ্রম একজন পঞ্চাশ বছরের মানুষ বা চল্লিশ বছরের মানুষ করতে পারেন সেটা কোনও দিন আমার বয়স বেড়ে গেলে করতে পারব না।”
প্রসঙ্গত, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের বিশেষ অধিবেশনের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ । তিনি বলেছিলেন, “পার্টিটা যেন সিপিএম-এ পরিণত না হয়। যতক্ষণ কেউ দেহত্যাগ করবে, ততক্ষণ পদত্যাগ করবে না। বয়স মানে রাজনীতি করুন। তবে রাজনীতি করতে গেলে বিধায়ক-সাংসদ হতে হবে এটা কোন দেশের রাজনীতি?” কুণালের এই মতকে খণ্ডন করেননি অভিষেক। তবে নিজের বক্তব্যে বারংবার ‘কার্যক্ষমতার’ কথা তুলে ধরতে ভোলেননি। বলেছেন, “দলে প্রবীণদেরও অত্যন্ত প্রয়োজন। তাঁদের অভিজ্ঞতা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
এদিন অভিষেকের মন্তব্যের পর কুণাল বলেন, “সব পেশার মত রাজনীতিতেও বয়সের সীমা থাকা উচিত। অভিষেক তো এটা ঠিকই বলেছেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় শারীরিক গতি কমে যায়, এটাও ঠিক। কিন্তু কেউ বলছে না সিনিয়রদের বাদ দিতে। কিন্তু সিনিয়রের ভূমিকাটা বদলানো যায়। তাঁরাই দলের কাছে অফার করতে পারেন, আমরা সাংসদ, বিধায়ক হব না, সংগঠনের কাজে থাকব। কিন্তু দলে থাকতে গেলেই সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী থাকতে হবে, এই ভাবনাটা তো ঠিক নয়।”