কলকাতা: শাসক দলের দাবি, জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন স্লোগান দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। আর বিজেপির দাবি, জাতীয় সঙ্গীতের কথা তাঁদের আগে থেকে জানানো হয়নি। তাঁরা যখন ধরনা দিচ্ছিলেন, তার মাঝেই শুরু হয়ে যায় ‘জন গণ মন…’। সেই মামলায় বিজেপি বিধায়কদের গ্রেফতার না করার মৌখিক নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ধরনা আগে থেকেই চলছিল, পরে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। অর্থাৎ জাতীয় সঙ্গীত শুনেও তাঁরা থামেননি, এমনটা নয়। এই মামলা থেকে বিধায়করা অব্যাহতি পাবেন কি না, সে ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
মামলাকারীদের আইনজীবী দাবি করেন, অপরাধযোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। তিনি সওয়াল করেন, বিরোধী দলের নেতারা ওই দিন বিধানসভার গেটের সামনে জমায়েত করেছিলেন। আর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছিল শাসক দলের জমায়েত থেকে। সেক্ষেত্রে কীভাবে জাতীয় সঙ্গীতের অপমান করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মামলাকারীদের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদারের দাবি, জাতীয় সঙ্গীত শুরু হওয়ার আগে কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি।
বিচারপতি সেনগুপ্তও এদিন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এটা স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে যে, জাতীয় সঙ্গীত হবে সেটা আগে থেকে ঘোষণা করতে হবে।’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘বেলা ৩ টে তখন ধরন চলছিল। এরপর বিরোধীরা যান বিধানসভা। তাঁরা স্লোগান দিতে দিতে ঢোকেন। হঠাৎ গান শুরু হয়ে যায়। জাতীয় সঙ্গীত শুরুর কথা জানানো হয়নি।’ বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেউ এই এজলাসে হঠাৎ গান শুরু করলে কী করতে হবে? কিশোর দত্ত পালটা প্রশ্ন তোলেন, এজলাসে এমন কিছু হলে আমরা কি মামলার শুনানি বন্ধ করব না? এটা কোনও সাধারণ মামলা নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। সোমবারই ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৯ নভেম্বর তৃণমূল এবং বিজেপির জোড়া কর্মসূচি ছিল বিধানসভা চত্বরে। সে দিনই বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ ওঠে। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। এবার তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।