কলকাতা: পুজো মিটটেই হু হু করে বাড়ছে বাংলায় করোনা (Covid19) আক্রান্তের সংখ্যা। অন্যদিকে বর্ষার মরসুম যেতে না যেতেই ডেঙ্গুরও বাড়বাড়ন্ত রাজ্যে। কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিতেও জ্বর, শরীরে যন্ত্রণা নিয়ে ডাক্তারখানা কিংবা হাসপাতালগুলিতে বাড়ছে লম্বা লাইন। এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে এক হাত নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের দাবি, এই ব্যর্থতা সরকারের। অথচ তারা তা স্বীকার করবে না। উল্টে তারা নির্বিকার।
শুক্রবার একটি ফেসবুক বার্তায় অধীর চৌধুরী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ডেঙ্গু। প্রতি বছর বর্ষার সময় থেকে এই ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যায়। হাসপাতালে শিশুদের জন্য বেডের আকাল। জ্বর কাশি নিয়ে শ’য়ে শ’য়ে বাচ্চা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।”
করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রেও একই ছবি তা তুলে ধরে অধীর চৌধুরী বলেন, “করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে। দুর্গাপুজোয় বাংলার মানুষ যে ভাবে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় করেছেন তাতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ছিলই, করোনা বাড়তে পারে, বেড়েছে। এই করোনা, ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্তের দায় সরকারকেও তো নিতে হবে। এগুলি হচ্ছে সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ। কিন্তু তারা তো স্বীকার করবে না। মানুষকে একটু সতর্ক হয়ে চলতে বলতে পারত সরকার। আগের বছর তো মানুষ সতর্ক ছিলেন। ঈদের সময় বলেছিলেন, বাইরে বেরোনো যাবে না। মানুষ বেরোননি। দুর্গাপুজোতেও যদি বলতেন সাবধানে দুর্গাপুজো করতে, তা হলে মানুষও সাবধানী হত। অথচ কোনও রাশই ধরল না সরকার। কাতারে কাতারে মানুষ পথে নামলেন। রাজ্যে যদি করোনার সংক্রমণ বাড়ে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নির্বুদ্ধিতার জন্য বাড়বে।”
গত জুলাই মাসের শেষের দিক থেকেই করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এ রাজ্যে ৮০০-র নীচে নামতে শুরু করে। কিন্তু দুর্গাপুজো মিটটেই ফের চোখ রাঙাচ্ছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১২। শুধুমাত্র কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। পাশাপাশি দুই ২৪ পরগনার ছবিটাও আশঙ্কার। পজিটিভিটি রেট ২.১০ শতাংশ।
এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় ঢেউয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছেন না ঠিকই, তবে এ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যে উদ্বেগ থাকছেই স্বাস্থ্য দফতরের দৈনিক বুলেটিন থেকে তা কার্যত স্পষ্ট। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, ফের দৈনিক সংক্রমণ ৮০০-র উপরে। এই নিয়ে টানা তিন দিন ৮০০ পার করল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৮৪৬ জন। এর আগে বৃহস্পতিবার ও বুধবার এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৮৩৩ ও ৮৬৭।
অন্যদিকে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপও। ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে বিপদজনক ডেন ২ ও ডেন ৩। এ রাজ্যে এই দুই সেরোটাইপেরই বাড় বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেখা গিয়েছে ডেন ২ সব থেকে মারাত্মক। এর পিছনেই রয়েছে ডেন ৩। মাইক্রো বায়োলজিস্টরা বলছেন, ‘ডেন ২ ডেন ৩ মারাত্মক। অথচ এবারও শোনা যাচ্ছে এই দু’টো এ রাজ্যে ভালই পাওয়া যাচ্ছে। ডেন ৩ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’