কলকাতা : উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জার দাপাদাপি নতুন নয়। বিশেষত শহরের অন্যতম দীর্ঘ মা উড়ালপুলে এই ঘটনা প্রায়শই ঘটছে।একাধিকবার এই অভিযোগ সামনে আসার পর কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশও। জাল লাগিয়ে, নজরদারি চালিয়ে সাবধানতা বাড়ানো হয়েছে মা উড়ালপুলে। তা সত্ত্বেও সেই ঘটনা এড়ানো গেল না। আবারও চিনা মাঞ্জায় আঘাত লাগল এক যুবতীর। উড়ালপুলের ওপর দিয়ে স্কুটি চালানোর সময় আহত হন তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে মা উড়ালপুল হয়ে স্কুটিতে যাওয়ার সময় ঘুড়ির সুতোয় নাক কেটে যায় এক যুবতীর। পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে যান। আহত যুবতীর নাম ফতিমা আরওয়া। এ দিন তিনি পার্ক সার্কাস ৭ পয়েন্ট থেকে বাইপাসের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় এই ঘটনা ঘটে। প্রগতি ময়দান থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই যুবতী।
চিনা সুতোয় দুর্ঘটনা আটকাতে মা উড়ালপুলের দু পাশে লোহা দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও কী করে ঘটছে এই ধরনের দুর্ঘটনা? উঠছে প্রশ্ন।
গত বছরের নভেম্বরে এই মাঞ্জায় আহত হন খোদ পুলিশকর্মী। দীপালি অধিকারী নামে পার্ক স্ট্রিট থানার এএসআই আহত হন ওই একই কারণে। ৪ নম্বর ব্রিজ এবং কোহিনুর মার্কেটের মাঝামাঝি এলাকায় চিনা মাঞ্জার ‘কবলে’ পড়েছিলেন তিনি। সুতোয় গলার বেশ অনেকটা কেটে গিয়েছিল তাঁর। স্কুটি নিয়ে ফ্লাইওভারের ওপর পড়েও গিয়েছিলেন, যার ফলে গুরুতর আহত হন।
মা উড়ালপুলে এই ঘটনা প্রায়শই ঘটে। চিনা মাঞ্জা বা চিনা সুতো সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে তা বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে? সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে একাধিকবার। মেটিয়াবুরুজ, এন্টালি, খড়দহে নাকি এই চিনা মাঞ্জার ব্যবসার রমরমা বলে জানা যায়। পুলিশের নজরদারির অভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ইতিমধ্যেই মা উড়ালপুলে বিশেষ গার্ডরেল বসানো হয়েছে এই বিপদের কথা মাথায় রেখেই। উড়ালপুলে যে রেলিং ছিল, তার ওপর দিয়েই এই গার্ডরেল বসানো হয়। তা সত্ত্বেও এড়ানো গেল না বিপদ। মা উড়ালপুলের যে অংশটি পার্ক সার্কাসের দিকে যায়, মূলত সেদিকেই চিনা মাঞ্জার দাপট বেশি।
মূলত নাইলনের সুতোর ওপর ধাতু ও কাঁচের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয় এই চিনা মাঞ্জা। এর মধ্যে সিন্থেটিক আঠাও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার ফলে ব্লেডের মতো ধারালো হয়ে ওঠে এই মাঞ্জা। সুতোর আঘাতে প্রাণ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এই চিনা মাঞ্জায় পাখির মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। যেহেতু কাঁচের গুঁড়োর সঙ্গে সিন্থেটিক আঠা, ধাতুও মেশানো থাকে, ফলে জল লাগলেও তা পচে না। জাতীয় পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই এই চিনা মাঞ্জাকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন : SSC Chairman: নিয়োগে স্বচ্ছতা দরকার ছিল! এসএসসি-র দুর্নীতির অভিযোগে ‘সিলমোহর’ প্রাক্তন চেয়ারম্যানের