কলকাতা: চায়ের কাপে চুমুক তো দিচ্ছেন, কিন্তু সেই চায়ের সঙ্গে পেটে কী যাচ্ছে, তা কী জানেন? চায়ের পাতা বা গুড়োয় মিশে থাকা কীটনাশক শরীরে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তবে আর চিন্তার কারণ নেই, এবার আপনার চায়ে কতটা কীটনাশক বা রাসায়নিক মিশে আছে, তা বলে দেবে অ্যাকলিভিয়া।
টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন , টোকলাই কলকাতা, আরোগ্যম মেডিসফট সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি করেছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক র্যাপিড স্ক্রিনিং প্ল্যাটফর্ম, যা গ্রিন টি-র পাতায় কতটা কীটনাশক বা তার অবশিষ্টাংশ রয়েছে, তা শনাক্ত করবে। এই মেশিনের ভ্যালিডেশনে প্রথম ধাপও পূরণ হয়ে গিয়েছে বলেই জানানো হয়েছে।
এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ভারতীয় চা শিল্পে নতুন মোড় আনতে পারে। এফএসএসএআই-র নির্ধারিত গুণমানের মাপকাঠির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কীটনাশক ও রাসায়নিকের মাত্রা ঠিক রাখতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে চা শিল্পকে। চায়ের পাতায় যাতে অতিরিক্ত কীটনাশক বা রাসায়নিক না থাকে, তার জন্য কড়া নজরদারি ও পরীক্ষা করা হয়। এই মেশিনের আবিষ্কার, সরকারের নির্দেশ মেনে চলতেই বিশেষ সহায়তা করবে।
উৎপাদনের আগেই গ্রিন টি-তে কতটা কীটনাশক রয়েছে, তা পরীক্ষা করা যাবে। এতে গোটা সাপ্লাই চেইন সুষ্ঠভাবে এগোত পারবে। অ্যাকলিভিয়া সম্পর্কে টিআরএ-র সেক্রেটারি জয়দীপ ফুকা বলেন, “বৈশ্বিক চা শিল্পে অ্যাকলিভিয়া এক অনন্য পণ্য।”
জানা গিয়েছে, অত্যন্ত হালকা ওজনের (৫০০ গ্রাম) টেস্টিং প্ল্যাটফর্ম হল অ্যাকলিভিয়া। এতে মাত্র ২ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই নির্ধারণ করা যায় যে কোনও রাসায়নিক বা কীটনাশকর অবশিষ্ট রয়েছে কি না। মাছ চাষ বা সেচের জলেও ভারী ধাতু বা প্রয়োজনীয় রাসায়নিক রয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করা যায়। এই কিটে যাবতীয় তথ্য সরাসরি ক্লাউড বেসড সার্ভারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মূলত গ্রিন টি ও বিভিন্ন মশলায় মোনোক্রোটোফস, ফিপ্রোনিল, অ্যাসিফেটের মতো কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ উপস্থিত রয়েছে কি না, তা নির্ণয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
কলকাতার টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের টিল্যাবে অ্যাকলিভিয়ার কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়েছে। জল ও গ্রিন টি-র উপরে এর পরীক্ষা করা হয়েছে। লক্ষ্মী টি-র অধীনে অ্যাকলিভিয়ার ফিল্ড ট্রায়াল হয়েছে।
এই কিটের প্রশংসা করে লক্ষ্মী টি কোম্পানির সিইও অতুল রাস্তোগী বলেছেন,”গ্রাহকদের চুমুক দেওয়া চা কতটা সুরক্ষিত, তা জানার জন্য বর্তমানে এই প্রযুক্তির অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের কাজে এবং চায়ের গুণমান নির্ধারণে এই প্রযুক্তি বিশেষভাবে সাহায্য করবে।”
আরোগ্যম মেডিসফট সলিউশনের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলস্টোন হল অ্যাকলিভিয়া।”