কলকাতা: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলির ঘরে ঢুকে দলবল নিয়ে তাণ্ডবের অভিযোগে তিনি আজ খবরের শিরোনামে। ‘ছাত্রনেতা’ গিয়াসউদ্দিনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, গিয়াসউদ্দিনকে নাকি ২০১৯ সালের বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন, যদি তাই হয়, তাহলে ২০২০ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর তৃণমূলের হয়ে কীভাবে প্রচারে গিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন? তৃণমূলের হয়ে আয়োজিত অবস্থান বিক্ষোভ সমাবেশে মাইক হাতে বক্তব্য রেখেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সেই ছবি। আর তা ঘিরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তবে এরই মধ্যে অন্য যুক্তি খাঁড়া করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে, আমরা সেটার কড়া ভাষায় নিন্দা করছি। কোনও অবস্থাতেই এই জিনিস বরদাস্ত করা যায় না। বরদাস্ত করা হবে না। খুবই স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে, কোনও কোনও মহল থেকে যাকে তৃণমূলের ছাত্রনেতা হিসাবে দেখানো হচ্ছে, বা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি হিসাবে দেখানো হচ্ছে, এই ছেলেটিকে অনেক আগেই…অন্তত তিন বছর আগে নির্দিষ্ট কিছু কারণে, আপত্তিকর কাজকর্মের কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কালিমালিপ্ত করতে, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাটা ঘটানো হয়েছে, সেটা রেকর্ড করে এমনভাবে ছড়ানো হয়েছে, যাতে বিরোধীরা তৃণমূলকে সমালোচনা করে।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “যাকে উপাচার্যের উপর আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে, তাকে ২০১৮ সালে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।” তবে উল্লেখ্য তৃণাঙ্কুরের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন গিয়াসউদ্দিন, এরকম একটি ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। গিয়াসউদ্দিনকে ‘তৃণমূল ছাত্র নেতা’ বলার ক্ষেত্রে আপত্তি রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। কিন্তু প্রশ্ন, যদি তিন বছর আগে বহিষ্কারই করা হয়, তাহলে ২০২০ সালেও তৃণমূলের সমাবেশে তাঁকে কীভাবে বক্তৃতা রাখতে দেখা গেল? এ প্রশ্নের কোনও উত্তর এখনও তৃণমূলের তরফে দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে গালিগালাজ করছেন গিয়াসউদ্দিন। কীভাবে তিনি এই সাহস পেলেন? সেই তথ্য খুঁজে বার করতে গিয়েই উঠে আসতে থাকে একের পর এক তথ্য। এই ঘটনায় আরও একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়। জ়িম নওয়াজ় নামে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নেতাকে বলতে শোনা যায়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই ঘটে যাক না কেন পুলিশ সেখানে যাবে না। নির্দেশ দেওয়া আছে টেকনো সিটি থানার আইসি-কে। এমনকী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও গোলাম রব্বানিও এই বিষয়ে অবগত বলে দাবি করা হয়। এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা। এরপর বিষয়টি আরও চড়তে থাকে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তথ্য চেয়েছেন রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়। সেক্ষেত্রে আলিয়া ইস্যুতে আবার রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।