সরকারের কাছে বকেয়া কয়েক কোটি টাকা, মন্ত্রীকে চিঠি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের
Aliah University: পাশাপাশি ২০১৯ সাল পর্যন্তের মার্চ মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট হয়ে গিয়েছে। তার আগের আর্থিক নথি চেয়ে কেন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের।
কলকাতা: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংখ্যালঘু দফতরে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, তদন্ত কমিটিতে শিক্ষামহলের কেউ নেই। কোনও অভিযোগ ছাড়াই কমিশন ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের নথি তলব করেছে। অথচ ২০১৯-এর মার্চ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটও হয়ে গিয়েছে।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তদন্ত কমিশন গঠন নিয়ে তাদের কোনও বক্তব্য নেই। তদন্ত হলে তা খুবই ভাল কথা। সরকার চাইলেই তদন্ত করতে পারে। কিন্তু অভিযোগ অন্য জায়গায়। একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তদন্ত কমিটিতে চার জন প্রতিনিধি রয়েছেন, অথচ সেখানে শিক্ষামহলের কোনও প্রতিনিধি নেই। এখানেই আপত্তি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের।
পাশাপাশি এই তদন্ত কমিটি ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের একাধিক নথি চাইছে বলেও অভিযোগ। সেই নথির মধ্যে অ্যাকাডেমিক নথিও চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, আর্থিক নথি দিতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অ্যাকাডেমিক নথি অর্থাৎ অধ্যাপকরা কবে নিযুক্ত হয়েছেন, নিয়োগ পরীক্ষায় তাঁদের কত নম্বর ছিল এগুলি কেন তদন্ত কমিটি জানতে চাইছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শিক্ষক সংগঠন।
পাশাপাশি ২০১৯ সাল পর্যন্তের মার্চ মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট হয়ে গিয়েছে। তার আগের আর্থিক নথি চেয়ে কেন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি বিষয় এই ঘটনায় উঠে এসেছে।
২০২০-২১ অর্থবর্ষে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছিল ১১৫ কোটি টাকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুমোদন হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় এখনও মাত্র ১০ কোটি টাকা হাতে এসেছে। একই অভিযোগ ২০২১-২২ অর্থবর্ষেও। এখানেও প্রথমার্ধে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে আসা উচিৎ। এক টাকাও হাতে আসেনি বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইন শেখের বক্তব্য, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ সালে ১১২ কোটি টাকা সরকার অনুমোদন করে, আমরা পাই মাত্র ১০ কোটি টাকা। ২০২১-২২-এ ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কিছু পাইনি। আমাদের নানা কাজ চলছে। ল্যাব নিয়েও কাজ হয়েছে। ভেন্ডারদের বিল আটকে রয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকে হয়ত নোটিসও পাঠাচ্ছে আইনি। আমাদের অভিযোগ নয়, অনুরোধ সমস্যা সমাধান করা হোক। আমাদের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীও পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য উনি দায়বদ্ধ। তাই ওনাকে অনুরোধ করা উনি বিষয়টি দেখুন।”
একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি প্রসঙ্গে সাইন শেখের বক্তব্য, “তদন্ত কমিটি যখন হচ্ছেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত যাঁদের সম্যক ধারণা রয়েছে যেমন এক্স ভাইস চ্যান্সেলার বা বর্তমান সহ উপাচার্য বা এ ধরনের বিষয়ে অবগত যাঁরা তেমন কেউ কমিটিতে থাকলে ভাল হতো। সেটাই আমাদের বলার।” প্রসঙ্গত, সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের আওতাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই দফতরের পূর্ণমন্ত্রী মহম্মদ গোলাম রব্বানি।
আরও পড়ুন: তদন্তে যেতেই ঘিরে ধরল একদল, খুলে দেওয়া হল সিবিআইয়ের গাড়ির চাকার হাওয়া