‘তৈরি থাকো, আমরা আসছি’, প্রত্যাবর্তনের হুমকি দিয়ে জঙ্গলমহলে ফের মাও পোস্টার!

যদিও জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, এই পোস্টারের সঙ্গে আসল মাওবাদীদের কোনও যোগাযোগ নেই। পুরোটাই ভুয়ো।

'তৈরি থাকো, আমরা আসছি', প্রত্যাবর্তনের হুমকি দিয়ে জঙ্গলমহলে ফের মাও পোস্টার!
মাওবাদী নামে পোস্টার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 1:42 PM

সুজয় পাল: আবারও মাওবাদী নামে পোস্টার উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল জঙ্গলমহলে। সূত্রের খবর, শনিবার সকালে ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর থানার অন্তর্গত আন্ধারিয়া গ্রামে এই পোস্টার পড়ে। সাত সকালে রাস্তার উপর ইট চাপা দেওয়া অবস্থায় পোস্টারগুলি দেখতে পান গ্রামবাসীরা। উদ্ধার হওয়া দু’টি পোস্টারেই রাজ্য সরকারকে নিশানায় নিয়ে প্রত্যাবর্তনের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে। যদিও জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, এই পোস্টারের সঙ্গে আসল মাওবাদীদের কোনও যোগাযোগ নেই। পুরোটাই ভুয়ো।

শনিবার যে দু’টি পোস্টার বিনপুরে উদ্ধার হয় তার একটি দ্রুত সরকারি স্কুলে টিকাকরণের দাবি তোলা হয়েছে। অন্য পোস্টারে ১০০ দিনের কাজের টাকা সুদে-আসলে ফেরত দেওয়ার হুমকি রয়েছে। প্রথম পোস্টারটিতে লেখা, “সরকারি সাহায্যে স্কুলগুলিতে কেন কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না, তৃণমূল তার জবাব দাও।” দ্বিতীয় পোস্টারে লেখা রয়েছে, “যারা ১০০ দিনের কাজের টাকা খেয়েছো, সুদে-আসলে ফেরত দাও। যারা ইন্দিরা আবাস যোজনার টারা মেরে খেয়েছে তারা তৈরি থাকো, আমরা আসছি।” উভয় পোস্টারের নীচেই ‘মাওবাদী জিন্দাবাদ’ লেখা।

যদিও এই পোস্টার দেখার পর মাও-তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে জেলা পুলিশ। প্রশাসনের বক্তব্য, ইদানীং একাধিক সময় এই ধরনের নানা হুমকি পোস্টার দেখতে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও যোগ নেই। জঙ্গলমহলে মাও-সক্রিয়তাও আর বিশেষ নেই বলেই পুলিশের বক্তব্য। যে কারণে এই পোস্টারে আতঙ্কের কিছুই দেখছে না জেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবসের পর দিয়েই পুরুলিয়াতেও একই ভাবে তৃণমূল নেতাদের পদত্যাগের দাবি করে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার পড়েছিল। পুরুলিয়ার বরাবাজার এলাকা ছেয়ে গিয়েছিল মাওবাদীর নামে পোস্টারে। সেই পোস্টারে লেখা ছিল, “টিএমসি নেতাদের অবিলম্বে দল ছাড়তে হবে না হলে জনগণের আদালতে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।” এই পোস্টারে যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়ায়।

এই ঠিক ৩ দিনের মাথায় ২০ অগস্ট নাগাদ ফের একবার মাওবাদী নামে পোস্টার পড়ে পুরুলিয়ায়। সেখানে লেখা হয়েছিল, “যে বিজেপি মেম্বার টিএমসি পার্টিকে সমর্থন করবেন, সেই মেম্বারের স্বামীদের হাত দুটো কাটা যাবে। কারণ, বিজেপি পার্টির সম্মান যদি ঘুচাও, তাহলে তোমাদের খেলা শেষ। ধেলাত বামু অঞ্চল মনে রেখো, মাও জিন্দাবাদ।” তার মাসকয়েক আগে আবার ঝাড়গ্রামেও একই ধরনের পোস্টার উদ্ধার হয়। কিন্তু কোনও পোস্টার উদ্ধারের পরবর্তী সময় চোখে পড়ার মতো ঘটনা ঘটতে দেখা যায়নি। ফলে মাওবাদীদের নাম করে এই ধরনের পোস্টার সরকার বিরোধী একপ্রকার বিশেষ গোষ্ঠীর কাজ বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য়, প্রসঙ্গত, মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যেই স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মোট তিন ধাপে প্রায় ১৩০০ জনকে চাকরি দিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আরও পড়ুন: ‘কাজে যোগ দিন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা’, ‘উদার’ তালিবানি ফতেয়ার নেপথ্যে কারণ কী?