‘কাজে যোগ দিন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা’, ‘উদার’ তালিবানি ফতেয়ার নেপথ্যে কারণ কী?

একইসঙ্গে, তালিবানের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, কাবুলে যাদের কাছে সরকারি গাড়ি বা অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, তা যেন এক সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।

'কাজে যোগ দিন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা', 'উদার' তালিবানি ফতেয়ার নেপথ্যে কারণ কী?
পথে তালিবানি শীর্ষনেতাদের পোস্টার। তার সামনে দিয়েই হেঁটে যাচ্ছেন দুই মহিলা। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 11:27 AM

কাবুল: উঠে গেল মহিলাদের উপর ফতেয়া। কাজে ফিরতে বলা হল মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের। শনিবারই তালিবানি মুখপাত্র সুহেল শাহিন (Suhail Shaheen) টুইট করে কাবুল সহ অন্যান্য অঞ্চলের মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী (Female Health Workers)-দের কাজে ফেরার নির্দেশ দেন।

গত সপ্তাহে কাবুল দখলের পরই তালিবানের তরফে জানানো হয়েছিল, শরিয়া আইন মেনেই মহিলাদের শিক্ষা ও কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। কিন্তু চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারই তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আফগানিস্তানের সমস্ত মহিলারা যেন আপাতত বাড়িতেই থাকেন। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছিলেন, “এটা সাময়িক সিদ্ধান্ত। মহিলা সরকারি কর্মচারীরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া অবধি তারা যেন বাড়িতেই থাকেন।”

একই সঙ্গে তালিবান সদস্য়রা মহিলাদের সঙ্গে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা জানে না -এই কারণ দর্শিয়ে সমস্ত মহিলাদেরই পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি বাড়ির বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। তবে এ দিন তালিবানি মুখপাত্র সুহেল শাহিন জাবিদুল্লাহ মুজাহিদের কথাল উল্লেখ করে টুইটে লেখেন, “জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে রাজধানী ও সমস্ত প্রদেশের সমস্ত মহিলা কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ইসলামিক এমিরেটসদের মহিলাদের কাজ শুরু করা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।”

সূত্রের খবর, শীঘ্রই অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে চলেছে তালিবান। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় কে কে জায়গা পাবেন, তা নিয়ে আলোচনা করছেন শীর্ষ নেতৃত্বরা, এমনটাই তালিবান সূত্রে খবর। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, ইসলামিক এমিরেটস অব আফগানিস্তানের দায়িত্বভার পালনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারে একজন “আমির-উল-মোমিনিন” অর্থাৎ শীর্ষনেতার বিশ্বাসভাজন কোনও তালিবান কম্যান্ডার এই দায়িত্ব পাবেন।  ইতিমধ্যেই তালিবানের শীর্ষ নেতারা আগামিজদিনের তালিব সরকার ও তার মন্ত্রী কারা হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেছেন।

নয়া সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে আইন ব্যবস্থা, অন্তর্বর্তী সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা, বিদেশমন্ত্রক, অর্থ, তথ্যমন্ত্রকে। এছাড়াও কাবুলকে ঘিরে একটি বিশেষ মন্ত্রক গঠনের পরিকল্পনা চলছে। সরকার গঠনে সাহায্য করতে ইতিমধ্যেই কাবুলে এসে পৌঁছেছেন তালিবানের সহ প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বরাদর। অন্যদিকে, তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লাহ ওমারের ছেলে মোল্লাহ মোহাম্মদ ইয়াকুবও কাুন্দাহার  থেকে রাধানীতে এসে উপস্থিত হয়েছেন।

মহিলাদের অধিকারের প্রশ্নে তালিবান নেতারা জানিয়েছেন, আগের সরকারে যেমন মহিলারা কাজ করতেন, এই সরকারেও তারা বিভিন্ন সরকারি বিভাগের অধীনে কাজ করতে পারবেন। তবে মূলত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাতেই কাজের অধিকার সীমাবদ্ধ থাকবে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে যে হামলা চলেছে, তাতে হতাহতের সংখ্য়া দেখে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল টের পেয়েছে তালিবানরা। বহু চিকিৎসকও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে মহিলা স্বাস্থ্য়কর্মীরাই একমাত্র ভরসা।

একইসঙ্গে, তালিবানের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, কাবুলে যাদের কাছে সরকারি গাড়ি বা অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, তা যেন এক সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। এই নির্দেশ অমান্য করলে চরম শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। আরও পড়ুন: ‘আমার কোলেই মরে গেল ৫ বছরের বাচ্চাটা’, ঠিক কোন সময়ে বিস্ফোরণ হয়েছিল, জানাল প্রত্যক্ষদর্শী