কলকাতা : এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বেশ অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। অস্বস্তি রয়েছে টেট চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা নিয়েও। এবার এরই মধ্যে রাজ্যের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ক্ষেত্রেও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। বিষয়টি ইতিমধ্যেই গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, প্রশ্নের উত্তরপত্র ভুল করা হয়েছে। মামলাকারীর বক্তব্য, উত্তরপত্রে যা রয়েছে, তিনি ওই উত্তর দেননি। মামলাটি উঠেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। শুক্রবার মামলার শুনানির পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় উত্তরপত্র যাচাইয়ের জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির (CFSL) ডিরেক্টর এবং ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় এও মন্তব্য করেন, রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, মামলাকারী আব্দুল হামিদ নামে ওই পরীক্ষার্থীর বক্তব্য, তিনি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর নম্বরে সন্তুষ্ট না হয়ে তিনি আরটিআই করেছিলেন। আর সেখানেই উত্তরপত্রে তিনি দেখতে পান, একটি প্রশ্নের উত্তরও করেননি তিনি। অথচ, সেই প্রশ্নের উত্তরে ভুল বক্সে সার্কেল করা রয়েছে।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মামলার শুনানির সময় জানান, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির তরফে ওএমআর শিট খতিয়ে দেখা হবে। পরীক্ষার্থী যে কলমের কালিতে পরীক্ষা দিয়েছেন, উত্তরপত্রে তা ছাড়া অন্য কোনও কলমের কালি রয়েছে কি না, তা দেখা হবে। এর পাশাপাশি, উত্তরপত্রে কলমের একই চাপ প্রয়োগ করে লেখা হয়েছে কি না, তাও দেখা হবে। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে ওই উত্তরপত্র সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির কাছে পাঠাতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিএফএসএল-কে ওই উত্তরপত্র খতিয়ে দেখে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামীম এই বিষয়ে আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় নির্দেশ দিয়েছেন অরিজিনাল ওএমআর শিট এবং যে পেনটি ব্যবহার করে পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল, এই দুটিকেই সিএফএসএল-এ পাঠাতে হবে। কারণ, এই আব্দুল হামিদ নামে এই পরীক্ষার্থী যে বক্সে সার্কেল করেননি, সেই বক্সে সার্কেল করে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।” মামলাকারী আব্দুল হামিদ এই বিষয়ে বলেন, “আমি যে পেনটি দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, সৌভাগ্যক্রমে আমি সেটি সুরক্ষিত রেখে দিয়েছিলাম। আজ আদালতে সেই পেনটি জমা দিয়েছি। আমি একশো শতাংশ নিশ্চিত, আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে যে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা প্রমাণিত হবে।”