কলকাতা: এলপিজি গ্যাসের কনজিউমার নম্বরের সঙ্গে আধারের বায়োমেট্রিক যোগের কাজ চলছে রাজ্যজুড়ে। আধার নম্বর লিঙ্ক করতে সকাল থেকে গ্যাস ডিলারদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন। এমনিতেই নাজেহাল সাধারণ মানুষ। তার উপর আবার বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘এলপিজি হোস’ দেওয়ার নাম করে ১৯০, ২০০ এমনকী ৬০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করে বসছেন গ্যাসের ডিলারদের একাংশ। হোস মানে রবার কিংবা প্লাস্টিকের সুরক্ষা পাইপ। সেটাই জোর করে গছানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
কৃষ্ণনগরে বাড়ি রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের। তাঁর স্ত্রী সোমা বিশ্বাসের নামে বুধবার অভিযোগ উঠেছে। সোমাদেবীর কৃষ্ণনগরের ষষ্ঠীতলায় গ্যাস সার্ভিস সেন্টার। তিনিই এর লাইসেন্স হোল্ডার। অভিযোগ, এখানেই বুধবার আধারের লিঙ্ক করাতে এলে ২০০ টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগ, ২০০ টাকা নিয়ে পাইপ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাঁর দরকার নেই, তাঁকে বলা হচ্ছে এরপর সার্ভিস দেওয়া হবে না। এ নিয়ে দিনভর তপ্ত ছিল এলাকা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই। সেখানেও অভিযোগ, বায়োমেট্রিক করাতে গেলে গছিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্যাসের পাইপ। আর সেই পাইপের জন্য নিচ্ছে ১৯০ টাকা করে। গ্রাহক যখন বলছেন, বাড়িতে পাইপ রয়েছে। পাল্টা বলা হচ্ছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল হয়ে গেল। ২ বছর পার। তাই পাইপ নিতেই হবে। গ্য়াসের বায়োমেট্রিক করাতে গিয়ে বছর শেষে এ এক নতুন ‘ফাঁদে’ গ্রাহকরা।
কিন্তু সত্যিই কি এই পাইপ কিনতে বাধ্য গ্রাহকরা? এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বিজন বিশ্বাস বলছেন, সুরক্ষা হোস সকলেই নিতে বলা হয়। গ্রাহকের সুরক্ষার কথা ভেবেই তা বলা হয়। তবে চাইলে গ্রাহক তা নাও কিনতে পারেন। বাধ্যতামূলক নয়। আর এর জন্য পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ারও কোনও প্রশ্নই নেই।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড সূত্রে খবর, কেওয়াইসির জন্য কোনও টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। আর পাঁচ বছরের পুরনো হলে তবেই নিরাপত্তার জন্য নতুন হোস নিতে হয়। সেটাও বাধ্যতামূলক নয়। চাইলে নতুন হোস নাও নিতে পারেন গ্রাহকরা। তাহলে কীসের জোরে আধার লিঙ্ক করাতে গেলে গ্রাহকদের হাতে পাইপ গুজে দিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে, যথার্থ কারণ দেখাতে পারছেন না কেউই। তবে কেউ কেউ বলছেন, বেআইনিভাবে টাকা আয়ের একটা সুযোগ এসেছে। তা হাতছাড়া করছেন না অনেকেই। এই জোর জবরদস্তি তারই নমুনা।