কলকাতা: লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে চাকরি। শিক্ষক নিয়োগের এমন অভিযোগে একাধিক মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। এরই মধ্যে সামনে এলে মেডিক্যালের ছাত্র ভর্তি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মিলছে না সুযোগ! ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে অসাধু উপায় অবলম্বন করছেন একদল পড়ুয়া! এমনই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এক পড়ুয়া। আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি ছিল। এ বিষয়ে রাজ্যের কাছে জবাব চেয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন, দেবাশিস ভট্টাচার্যকে আদালতে তলবও করেছিলেন তিনি।
চলতি বছরের মে মাসে মেডিক্যালে ভর্তির জন্য NEET পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা ইতিশা সোরেন। গত জুলাই মাসে ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সেই পরীক্ষায় ইতিশার র্যাঙ্ক ছিল ২৮৩১৯। প্রথম কাউন্সেলিং ও দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পরেও তিনি সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পাননি। গত অগস্ট মাসে দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর বজবজের এক বেসরকারি কলেজ জগন্নাথ গুপ্ত মেডিক্যাল সায়েন্স এবং হাসপাতালে পড়ার সুযোগ পান তিনি।
মামলাকারীর দাবি, তিনি তপশিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত হয়েও সুযোগ পাচ্ছেন না। অথচ তপশিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত না হয়েও ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দিয়ে বহু প্রার্থী সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন বলে দাবি ওই মামলাকারীর। তাঁর আর্জি, ‘বেসরকারি কলেজে পড়ার খরচ অনেক। আমরা সেখানে পড়ব কী করে?’
এই মামলাতেই ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশনকে তলব করা হয়েছিল আদালতে। তিনি উপস্থিত হন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, আর.জি.কর মেডিক্যাল কলেজ সহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নাম ও মামলায় নাম থাকা বিতর্কিত পড়ুয়াদের ঠিকানা সহ বিস্তারিত তথ্য তলব করেছেন।
ওই পড়ুয়াদের জাতিগত শংসাপত্রও তলব করেছেন বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, এই বিতর্কিত পড়ুয়াদের জাতিগত শংসাপত্র ভুয়ো বলে প্রমাণিত হলে তাহলে সরকারি কলেজে ভর্তি বাতিল করতে হবে। সেই সব ফাঁকা আসনে যোগ্য প্রার্থীরা সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে এই পড়ুয়াদের পরে ডেকে পাঠাতে পারেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি। আগামী ৩ অক্টোবর বিকাল ৩টে ৩০ মিনিটে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। রাজ্যের তরফে সরকারি কলেজের তথ্য সহ হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিন।