অক্সিজেন ব্যবহারে বিরাট গাফিলতির কারণেই কি মৃত্যু বেশি বঙ্গে? হাড় হিম করা রিপোর্ট স্বাস্থ্যভবনে

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Jun 15, 2021 | 7:04 PM

রাজ্যের একাধিক সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই রিপোর্ট জমা পড়েছে স্বাস্থ্যভবনে। চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা।

অক্সিজেন ব্যবহারে বিরাট গাফিলতির কারণেই কি মৃত্যু বেশি বঙ্গে? হাড় হিম করা রিপোর্ট স্বাস্থ্যভবনে
ছবি- পিটিআই

Follow Us

কলকাতা: রাজ্যের কোভিড হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের ব্যবহার নিয়ে বিরাট গাফিলতির চিত্র উঠে এল খোদ স্বাস্থ্যভবনের রিপোর্টে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেন দেওয়ার সময় বড় ত্রুটি থেকে যাচ্ছে, রাজ্যের একাধিক সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই রিপোর্ট জমা পড়েছে স্বাস্থ্যভবনে। চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা।

সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যভবনের পরিদর্শন দলের চোখেই অক্সিজেন ব্যবহার সংক্রান্ত একাধিক বেনিয়ম ধরা পড়ে। ঠিক কেমন গাফিলতির ছবি দেখা যাচ্ছে? স্বাস্থ্যভবনের রিপোর্টে উল্লেখ পেয়েছে, যে রোগীর দেহে অক্সিজেনের পরিমাণ পর্যাপ্ত রয়েছে, তাঁকে অনেক ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। অথচ যেই রোগীর শরীরে চাহিদা বেশি, তিনি যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পাচ্ছেন না। এতে উভয় রোগীরই প্রাণ সংশয়ের তীব্র আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ রিপোর্টে লেখা হয়েছে, কোনও রোগীকে হাই-ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেনের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ৫০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। অথচ, সেই রোগীর দেহে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৮ শতাংশ। এর উল্টো ছবিটাও ধরা পড়েছে স্বাস্থ্যভবনের পরিদর্শন দলের নজরে। রিপোর্টে উল্লেখ পেয়েছে, কোনও রোগী যাঁর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ শতাংশ, তাঁকে ফেস মাস্কের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে মাত্র ৮ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রথম রোগীকে প্রয়োজন ছাড়াও অতিরিক্ত অক্সিজেন দেওয়ার ফলে ওই রোগীর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। এমনকী, মৃত্যুর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়ার নয়।

আরও পড়ুন: ‘স্বাধীন ভারতে নজিরবিহীন, বাংলায় গণতন্ত্রের মৃত্যুর ঘণ্টা শোনা যাচ্ছে’, মমতাকে পত্রাঘাত ধনখড়ের

অপরদিকে, যেই রোগীকে ফেস মাস্কের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ৮ লিটার অক্সিজেন দিয়েও স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯০ শতাংশ থাকছে, তাঁর অক্সিজেনের ফ্লো অবিলম্বে বাড়ানো দরকার। কিন্তু তেমনটা করা হয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে এই রোগীর শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি হতে পারে। গাফিলতির কারণে অবস্থা খারাপ হলে রোগীকে প্রাণ হারাতেও হতে পারে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিদর্শন দলের রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে, এই দুই ছবির কোনওটাই কাম্য নয়।

যদিও অক্সিজেন ব্যবহারে গাফিলতির এই ছবিটা পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নতুন নয়। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের উপর সর্বক্ষণের নজরদারীর অভাবেই দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা রোগীদের উপর যদি নিরবচ্ছিন্নভাবে নজর রাখা যেত, তবে আজ অনেক মানুষকেই হারাতে হত না।

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ২৪ ঘণ্টার হুঁশিয়ারিকে গায়েই মাখলেন না মুকুল, বরং বাড়ালেন দল ভাঙানোর জল্পনা

Next Article