কলকাতা: আমহার্স্ট স্ট্রিটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অধরা অভিযুক্তরা। তবে এই ঘটনার তদন্তে নেমে রাকেশ দাস ও তাঁর এক সঙ্গী নাম হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ খুন ও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছে। ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার ঠিক আগে আমহার্স্ট স্ট্রিট লাগোয়া কেশব চন্দ্র সেন স্ট্রিটে নিজের দোকানেই বসে ছিলেন দীপক। সেখানেই তাঁর প্রোমোটিং সংক্রান্ত ব্যবসার অফিস রয়েছে। বেলা ১২টা নাগাদ রাকেশ দাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও এক ব্যক্তি।
পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু একটা বিষয় নিয়ে দীপকের সঙ্গে বচসা হয় রাকেশের। কথা কাটাকাটি হতে থাকে দুপক্ষের। সেসময়ই রাকেশ পকেট থেকে বন্দুক বার করে দীপককে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করে। গলা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় গুলি। এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন রাকেশ ও তাঁর সঙ্গী।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রাই প্রথমে দীপককে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএস মে়ডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গুলিটি ঠিক দীপকের গলার নলি ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। খুব কাছ থেকে গুলি করার জন্যই এমনটা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, রাকেশ মূলত প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা করতে। আর সেই সূত্রেই দীপকের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তবে রাকেশ আর কাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল, সেটি জানতে চাইছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না রাকেশের। তাঁর খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। থমথমে হয়ে রয়েছে এলাকা। পুলিশ রাস্তার ধারের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।
দিনে দুপুরে গুলি চালানোর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, ঠিক গত মাসেই প্রমোটিং সংক্রান্ত শত্রুতার জেরেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন দুই যুবক। সেবার গুলি চলেছিল রিজেন্ট পার্ক এলাকায়। পেশায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী পঙ্কজ সাহা ও তাঁর বন্ধ অভিজিৎ মল্লিক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ তাঁরা গাড়ি থেকে ইমারতি দ্রব্য নামাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেসময়ই ভাস্কর ভট্টাচার্য নামে এলাকারই এই যুবক তাঁর দলবল নিয়ে হামলা চালায়। এই ভাবে শহরের বুকে বারবার গুলি চালনার ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কীভাবে এত বন্দুক অতি সহজেই হাতে পেয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, কীভাবে এত সহজেই প্রকাশ্যে গুলি চালনার মতো ঘটনা ঘটছে , তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টাতেও বৃষ্টির পূর্বাভাস এই ৭ জেলায়! তাপমাত্রা কি ফের কমবে?