কলকাতা: শহরের বুকে রাজভবনের সামনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে জমে থাকা জলের মধ্যে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। TV9 বাংলার ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই দৃশ্য। ততক্ষণাৎ TV9 বাংলার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে ঘটনাটি লালবাজারে জানানো হয়। ফোন পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি বিদ্যুতের খুঁটি স্পর্শ করতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।
কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছলেও উদ্ধারকার্য শুরু করতে দেরী হয়। উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা ছিল, জলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে উদ্ধার করতে গেলে তাঁরাও বিপদে পড়বেন। ফলে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি অফিস থেকে ফিরছিলেন। সেই সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। যদিও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছনর কিছু শুরু হয় উদ্ধারকার্য। দমকলের সাহায্য নিয়ে এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সূত্রের খবর, মৃত ব্যক্তির নাম ঋষভ মণ্ডল (২৫), বাড়ি ফারাক্কায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে পরিবার-সহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত ঋষভ মণ্ডলের বাবা জানান, ঋষভ কলকাতায় হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামে ইঞ্জিনিয়ারিং পোস্টে চাকরি করতেন।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানান, “ওই লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলছিল না। তবে এটা ঠিক ওই লাইনে হুকিং করা ছিল। আমি এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছি। মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট নাকি বাজ পড়ে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে। আলো বিভাগের ডিজিকে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দু লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘মানুষের ভরসার যোগ্য সম্মান দিতে হবে’, চিঠিতে দলীয় বিধায়কদের লিখলেন মমতা
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই অঝোরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে কলকাতা-সহ পাশ্বর্বর্তী এলাকায়। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে কলকাতার যে এলাকাগুলি জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে, তা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে। কেননা এর আগেও জল জমে থাকার কারণে শহরে এবং রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতবছর আমপান ঘূর্ণিঝড়ের পরও এমন একাধিক ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছিল। ফলে খুব প্রয়োজন ছাড়া জলমগ্ন এলাকায় না যাওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি যেতেও হয়, সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের খুঁটির ধারেকাছে না যাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: উল্টোডাঙায় ডুবল বাস, ঘণ্টা তিনেকের বৃষ্টিতে জলে থৈথৈ কলকাতা, দু’দিন চলবে বারিধারা