কলকাতা: নতুন বছরেই বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের। ১ জানুয়ারি থেকেই বৃদ্ধি হবে জিএসটি। আর এতেই চোখে অন্ধকার দেখছেন অনেক ছোট শিল্পীরাই। মোদী-সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এ বার টুইট করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র (Amit Mitra)।
টুইটে অমিত মিত্র দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হলে দেশের প্রায় দেড় কোটির বেশি মানুষ কর্মচ্যুত হবেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে এমনিতেই কাজ হারিয়েছেন অনেকে। সেখানে আবারও জিএসটি বসালে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অমিত।
টুইটে তিনি লিখেছেন, ” মোদী সরকার ১ জানুয়ারি আরেকটি ভুল পদক্ষেপ করবে। বস্ত্রশিল্পের ওপর জিএসটিবাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলেদেড় কোটি মানুষের চাকরি চলে যাবে এবং একলক্ষ ইউনিট বন্ধ হয়ে যাবে। মোদীজি, এখনই একটি জিএসটি কাউন্সিলের সভা ডাকুন এবং লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের মাথায় এই ঘাতক তরবারি পড়ার আগে সিদ্ধান্ত বদলে দিন।”
Modi Govt will commit another BLUNDER on Jan 1st. By raising GST on Textiles,5% to 12%, 15 MILLION JOBS WILL BE LOST & 1 lakh units will CLOSE. Modi ji, CALL a GST COUNCIL MEETING NOW & REVERSE DECISION before SWORD OF DAMOCLES FALLS ON HEADS OF MILLIONS OF COMMON PEOPLE.
— Dr Amit Mitra (@DrAmitMitra) December 26, 2021
অমিতের টুইটের পক্ষে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “অমিতবাবু একদম ঠিক কথা বলেছেন। আসলে বস্ত্রশিল্পে জিএসটি বাড়লে কনজিউমারই তো কমবে। কাপড় তো কিনবেন আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষ। জিএসটি বাড়লে আমরা কি কিনতে যাব! তাহলে অনেক ছোট ছোট বুটিক যাঁরা নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তাঁরা আর ব্যবসা করতে পারবেন না।”
যদিও, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর টুইটের বিরোধিতা করেছে পদ্ম শিবির। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মেঘের আড়াল থেকে তীর ছোড়েন অমিতবাবু। তাঁর আমলেই বাংলা একটি দেউলিয়া রাজ্যে পরিণত হয়েছে।” এখানেই না থেমে বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘‘আমাদের দেশের বস্ত্রশিল্পে গত দু’বছরে ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। সেই কারণে ভারত সরকার একটু বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন এই বস্ত্রশিল্পের ওপর।’’
শমীকের আরও সংযোজন, ‘‘জিএসটি বাড়িয়ে যেমন ১২ শতাংশ করা হয়েছে, তেমনই তাঁরা যে কাঁচামাল কেনেন, তার থেকে জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। যাতে গোটা ব্যবস্থার মধ্যেই একটা ভারসাম্য থাকে। এর ফলে এই শিল্প উজ্জীবিত হবে। বৃদ্ধি হবে, কোথাওকেউ অনাহারে থাকবে না। কারও চাকরি যাবে না। কোনও কারখানার দরজায় তালা পড়বে না।’’
তবে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ভারতের বস্ত্রশিল্প অনেকটাই ছড়িয়ে থাকা, যাকে বলা যেতে পারে আনঅর্গানাইজড। একদিকে যেমন একাধিক বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে তেমনই নানা ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এই ছোট প্রতিষ্ঠানগুলির উপরেও সমহারে জিএসটি নির্ধারিত হলে আসলে ব্যবসার ক্ষতি তো হবেই। করোনাকালে কাজ খুইয়েছেন অনেকেই। ফলে, সামগ্রিকভাবে কমতে পারে উৎপাদন একইসঙ্গে বৃদ্ধি পাবে মূল্যও। সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষও এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।