কলকাতা : “আপনাদের লড়াই আপনাদের করতে হবে। আপনাদের লড়াই কেন্দ্রীয় নেতারা লড়ে দেবেন না।” শুক্রবার দলীয় নেতা ও কর্মীদের এমনই বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, “কান্নাকাটি করলে হবে না। আমরাও এক সময়ে অত্যাচারের শিকার হয়েছি। আমরা আজ ৭৭ পৌঁছেছি। ফলে হতাশার কোনও জায়গা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিআইএমের সঙ্গে লড়াই করতে করতে সিপিআইএমের মতো হয়ে গিয়েছেন। আমাদের কিন্তু তা করলে হবে না। আমাদের প্রকৃত মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।” এর পাশাপাশি দলের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পরামর্শ দিয়েছেন অমিত শাহ।
মমতার পথেই মমতার বিরুদ্ধে লড়াই। বঙ্গ বিজেপিকে দিশা দেখাতে মমতার লড়াইয়ের উদাহরণ দিলেন অমিত শাহ। বললেন, “চাইলেই নির্বাচিত সরকারকে ফেলা যায় না। তাই ৩৫৫ বা ৩৫৬ জারি নয়। লড়াই করুন।” সাংগঠনিক বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা মোদীর সেনাপতির। কাশীপুরকাণ্ডের পর চড়া সুর বিজেপি কর্মীদের। একই সুর বঙ্গ বিজেপির নেতাদেরও। তবে সেই দাবি মানতে রাজি নন অমিত শাহ। নিউটাউনে সাংগঠনিক বৈঠকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে ফেলতে হস্তক্ষেপ করবে না কেন্দ্রীয় সরকার।”
সেই সঙ্গে শুক্রবার বিকেলের ওই বৈঠকে আরও প্রশ্ন তোলা হয়, “কেন্দ্রীয় সরকারের কোন প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে এখানে প্রচার হয় না। কেউ টুইটও করেন না। এমন করলে কীভাবে চলবে?” এর পাশাপাশি দলীয় নেতা ও কর্মীদের আবার শূন্য থেকে শুরু করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বুথ কমিটি তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটতেই ফের বাংলার উপর বিশেষ নজর দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন,”বুথ পর্যন্ত শক্তিশালী হয়ে নিজেদের লড়াই নিজেদের করতে হবে। কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে হবে না। আমি আবার আসব।” সেই সঙ্গে বি এল সন্তোষও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, কেউ যেন দলকে নিজের সম্পত্তি না মনে করেন।
এর পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের উদাহরণ টেনে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করার টোটকা দিলেন অমিত শাহ। দলীয় নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশে অমিত শাহ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন লড়াই করে উঠে এসেছিলেন, কম মার খেতে হয়নি সিপিএমের থেকে। পরে সিপিএম যা করেছে তিনি সেটাই করছেন। শুধু সন্ত্রাস সন্ত্রাস বলে ভয় পেলে হবে না। আমার বিরুদ্ধে বহু মার্ডার কেস দিয়েছে। মেরেছে। আমি লড়াই করেছি। আমার মতো মার ক’জন খেয়েছেন? মমতা সিপিএমের মার খেয়ে উঠে এসেছেন।” অর্থাৎ, ২০২৬ সালকেই যাতে পাখির চোখ করে এগোয় রাজ্য বিজেপি, সেই টার্গেটই তৈরি করে দিলেন অমিত শাহ। তবে এদিনের বৈঠকে বেছে বেছে লোকেদের বলতে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে একাংশের মধ্যে। লকেট সহ অনেককেই বলতে দেওয়া হয়নি। হাত তোলা সত্ত্বেও বাছাই করাদের বলতে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।