কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, ছাত্রনেতা আনিস খান তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এ বার ফেসবুক লাইভে আনিসের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের চ্যাট দেখিয়ে একই দাবি করলেন তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য।
ফেসবুক লাইভে এসে দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “আনিস খান তৃণমূলের সঙ্গে ও তৃণমূলের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। আনিস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করত।” এরপরই আনিস বলেন, “এখন আমি আপনাদের একটা স্ক্রিন শট দেখাই।” উল্লেখ্য সেই স্ক্রিন শটে দেবাংশুর ‘এই বিজেপি আর নয়’ গানের কয়েকটি পংক্তি ছিল। তাতে লেখা. “আগামী দিনে কঠিন পথ, কে টানবে সুখের রথ। ভারতকে দেখাবে পথ, বাংলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।” আরও একটি পংক্তি, “যুবক বাঁচে গতি ধাকায়, ছাত্র-যুব মমতাময়।”
আনিস খান এই পংক্তিগুলি লিখেছেন। দেবাংশু দাবি করছেন, আনিস খান কোনও এক তৃণমূল নেতাকে মেসেঞ্জারে এই মেসেজগুলি পাঠিয়েছিলেন। যে দিন পাঠিয়েছিলেন, সেটি আরও উল্লেখ্যযোগ্য। দেবাংশু দেখিয়েছেন, আনিস খান কোনও এক তৃণমূল নেতাকে এই পংক্তিগুলি পাঠিয়েছেন ২০২০ সালের ২৮ অগাস্ট। যেদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। অর্থাৎ আনিস খান যে তৃণমূল ঘনিষ্ঠই ছিলেন, সেটাই প্রমাণ করতে চেয়েছেন দেবাংশু।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, ‘আনিস খান আমার ফেভারিট ছেলে।’ তাতে রাজনৈতিক জল্পনা বেড়েছিল কয়েকজন। কারণ আনিসের এলাকায় কান পাতলে শোনা যায়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ে এসএফআই সমর্থক ছিলেন তিনি। পরে আইএসএফ-ঘনিষ্ঠ হন। আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিও সেই দাবি করেছেন। ইতিমধ্যেই আনিসের মৃত্যুর বিচারের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিক কী ধরনের পোস্ট করতেন আনিস? তা নিয়েও তোলপাড় বাংলা। আমতা উলুবেড়িয়ার রাজনীতির ময়দানে আলাদা করে নিজেকে গড়ে তুলছিলেন আনিস খান। ডান বাম কোনও পক্ষকেই রেয়াত করছিলেন না। মৃত ছাত্রনেতার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে তার প্রমাণ ভুরি ভুরি। আর তাতেই কি চক্ষুশূল হয়েছিলেন শাসক বিরোধী সব পক্ষের? উলুবেড়িয়া অঞ্চলে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের নেতা হয়ে উঠেছিলেন আনিস। ২০২০ সালে উমর খালিদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। এক সুরে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূলকে তুলোধনাও করেন।
এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে আরও একটি বিষয়। সংখ্যালঘু ভোটে ভরসা রাখা স্থানীয় তৃণমূল নেতারা আনিসের উত্থানকে ভালো চোখে দেখেননি। সম্প্রতি স্কুল কলেজ খোলা সহ একাধিক ইস্যুতে শাসকদলের কড়া সমালোচনা করতে দেখা যায় আনিসকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় করা আনিসের পর পর পোস্টই তার প্রমাণ। আনিস রেয়াত করেননি গেরুয়া শিবিরকেও। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকছে, আনিস কি সব পক্ষের কাছেই কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন?
আরও পড়ুন: Anis Khan Death: ‘সিট সব গুলিয়ে দিতে আসছে’, অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত চাইছেন দিলীপ ঘোষ