হাওড়া: ছাত্র নেতা আনিসকে খুনের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত আমতা (Amta)। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুন করা হয়েছে তাঁকে। শুক্রবার রাতে আনিসের বাড়িতে ‘পুলিশ’ গিয়েছিল। অভিযোগ উঠছে, তিন সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক পুলিশ অফিসার এসেছিল। তারা জোর করে বাড়িতে ঢুকে তিনতলায় উঠে যায়। আর তারপরই ধাক্কা মেরে ঠেলে ফেলে দেয় যুবনেতাকে। এরপর থেকেই রাজপথে শুরু হয় লাগাতার প্রতিবাদ। রবিবার সকাল থেকে আনিসের মৃত্যু নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয় আমতা। দফায়-দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসী। গতকাল উত্তেজনা ছড়ালেও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। আজকে পুলিশ এলাকায় ঢুকতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। কেন গতকাল নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি? প্রশ্ন পরিবার, পরিজনদের। চাপের মুখে পড়ে শেষমেশ ফিরে যেতে হয় গোয়েন্দাদের।
যুব-ছাত্রনেতার মৃত্যুতে গোটা গ্রামে ক্ষোভের সঞ্চার রয়েছে। হাজার-হাজার গ্রামবাসীকে এদিন পথে বেরিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে। প্রতিবেসী থেকে শুরু করে ছাত্রনেতার পরিবারের প্রতিটি মানুষ সুবিচার চেয়েছেন এই মৃত্যুর। পুলিশের উপর আস্থা রাখছেন না এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, পুলিশের বেশেই কেউ এসে ধাক্কা মেরেছে আনিসকে। এই বিষয়ে পাশ্ববর্তী গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “মানুষ ক্ষেপে রয়েছে। কারণ আনিস সবসময় সাংস্কৃতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সবাইয়ের আদরের। আমি গ্রাম প্রধান হিসেবে চাইব যাতে ও সুবিচার পায়।”
সূত্রের খবর, আনিস খুনে একাধিক আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। এর আগেও না কি হুমকি পেয়েছিল ছাত্রনেতা। তখন থানায় অভিযোগ জানানোও হয়েছিল। কিন্তু আদৌ সেই সময় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি পুলিশের তরফে। পাশ্ববর্তী গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “আমি শুনেছিলাম ও এর আগে একটি রক্তদান শিবির করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা করতে দেওয়া হয়নি। সেদিন আমায় আনিস জানায় যে, সে পরে কখনও রক্তদান শিবির করবে।”
প্রসঙ্গত, জানা গিয়েছে, আইএসএফ করতেন আনিস। এর আগে বাগনান কলেজে পড়ার সময় এসএফআইয়ের সমর্থক ছিলেন তিনি। এই ঘটনার খবর পাওয়ার পরই আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “তিনজন সিভিক ভলান্টিয়ার, একজন পুলিশ অফিসার এসেছিলেন বলে জানতে পেরেছি। জোর করে ঘরে ঢুকে তারা বাড়ির তিনতলার ঘরে চলে যায়। দু’ পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আবার নীচে নেমে আসে। এদিকে জোরে আওয়াজ শুনে বাড়ির লোকজন উপরে ছুটে যান। দেখেন ছেলে পড়ে রয়েছে। যখন সিভিক ভলান্টিয়াররা বেরিয়ে যাচ্ছিল, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে বলেছে, ‘চলুন স্যর, কাজ হয়ে গিয়েছে’।”