Sehgal Hossain: ‘দিনমজুর’ মাধব কোন জাদুবলে পেট্রোল পাম্পের মালিক? সায়গলের মৃত ‘বন্ধু’কে নিয়েও বাড়ছে রহস্য
Sehgal Hossain: মাধবের বাড়ির একাংশ এখনও মাটির। সেখানেই থাকেন বাবা। ছেলে কী কাজ করতেন, সে বিষয়ে বেশি কিছু জানা নেই তাঁদের।
বোলপুর : অনেকেরই মনে থাকবে, গত এপ্রিল মাসে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেন গ্রেফতার হওয়ার কিছুদিন আগে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হয় সায়গলের ছোট মেয়ের। সে দিন ইলামবাজারের রাস্তায় রাতের অন্ধকারে যে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল, তাতে ছিল সায়গলের ছোট মেয়ে ও সায়গলের এক বন্ধু। দুর্ঘটনায় সেই বন্ধুরও মৃত্যু হয়। মৃত যুবকের নাম মাধব কৈবর্ত্য। লাভপুরের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক ছিলেন তিনি। দিনমজুরের কাজ করা মাধব পাম্পের মালিক হলেন কী ভাবে? সদুত্তর নেই তাঁর পরিবারের কাছেও। মাধবের মৃত্যুর ঘটনা থেকে তাঁর সম্পত্তি, সবটাই ভাবাচ্ছে সিবিআই আধিকারিকদের।
কে এই মাধব কৈবর্ত্য? কী করতেন তিনি?
বীরভূমের কঙ্কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সীতাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাধব। মাধবের বাবার মাছ ধরার জালের ব্যবসা ছিল। তিনি কখনও মাছের ব্যবসা করেছেন, আবার কখনও দিনমজুরের ব্যবসাও করেছেন তিনি। সামান্য জমিজমা আছে, তাতেই চাষবাস করেন। মাধব খুব অল্প বয়স থেকে বিভিন্ন রকম কাজ করেছেন বলেই জানা যায়। কখনও মোবাইল সারানোর কাজ করতেন, কখনও গ্যাসের দোকানে কাজ করেছেন আবার কখনও দিনমজুরের কাজ। তাঁর সঙ্গে সায়গলের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল বলেই জানা যায়।
দিনমজুরের কাজ করে কী ভাবে করলেন পেট্রোল পাম্প?
মাধব কখনও বড় ব্যবসা করেছেন বা চাকরি করেছেন এমন নয়। তা সত্ত্বেও কোন অদৃশ্য জাদুবলে তিনি পেট্রোল পাম্পের মালিক হলেন, সেটাই প্রশ্ন। পেট্রোল পাম্প করতে অন্তত এক বিঘা জমি প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া পাম্পের লাইসেন্সের জন্যও লাগে মোটা টাকা। সে টাকা কোথা থেকে এল, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
পেট্রোল পাম্পটির নাম সাগরিকা ফিলিং স্টেশন। মাধবের মায়ের নাম সাগরিকা। বর্তমানে মাধবের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী চালাচ্ছেন সেই পেট্রোল পাম্প।
সাদামাটা বাড়িতেই বাস মাধবের পরিবারের, কী বলছেন বাবা-মা?
সেই মাধবের বাড়িতেই পৌঁছে গিয়েছিল Tv9 বাংলা। বাড়ির কিছুটা অংশ এখনও মাটির। সেখানেই থাকেন মাদবের বাবা, মা। ছেলের রোজগারের ব্যাপারে তাঁরা খুব বেশি কিছু জানতেন না।
মাকে ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, অস্বাভাবিক কিছু ঘটেনি। দুর্ঘটনাতেই তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সায়গলের সঙ্গে মাধবের পরিচয় কতদিনের, তা জানতেন না তিনি। তবে বন্ধুত্বের কথা জানতেন। কী করতেন ছেলে? মায়ের উত্তর, ‘বাইরে যেত কাজ করতে। কী করত জানি না।’ ছেলের কাছে অত টাকা কোথা থেকে এল, তারও উত্তর নেই মায়ের কাছে।
বাবাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, হয়ত কাজ করে টাকা জমিয়েছিল! অর্থাৎ স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি তিনিও।
সব মিলিয়ে মাধবের বিপুল সম্পত্তি স্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। অনুব্রতর টাকায় আরও কেউ লাভবান হয়েছিলেন কি না, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।