কলকাতা: রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে নালিশ জানাল এপিডিআর। গত বৃহস্পতিবার বিধানসভা চত্বরের বাইরে শুভেন্দু অধিকারীর এক মন্তব্য ঘিরে আপত্তি জানিয়েছে এপিডিআর। মহিলাদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সেদিন শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে বাংলায় খুনিদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গিয়েছে। এদের প্রয়োজন হলে এনকাউন্টার করা উচিত বলে মনে করি।’ কথা প্রসঙ্গে যোগী-রাজ্যের উদাহরণও টেনেছিলেন তিনি। শুভেন্দুর সেদিনের মন্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি এপিডিআর-এর।
কী অভিযোগ এপিডিআর-এর? শুভেন্দুর মন্তব্যে কেন আপত্তি জানাচ্ছে তারা? রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে পাঠানো চিঠিতে এপিডিআর লিখেছে, ‘শুভেন্দু অধিকারী প্রভাবশালী নেতা। তাঁর বক্তব্যের একটা সামাজিক অভিঘাত আছে। কোনও অভিযুক্তকে বিনা বিচারে আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ছাড়া এনকাউন্টারের নিদান সাধারণ মানুষকে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা না রেখে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার জন্য প্ররোচনা দেবে।’ এপিডিআর আরও লিখছে, যে কোনও অভিযুক্তকেই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত। বিনা বিচারে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। এমন অবস্থায় শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা’ প্রকাশ করছে বলেও অভিযোগ এপিডিআর-এর।
এই নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে ইমেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন এপিডিআর-এর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর। তাঁর বক্তব্য, ওই মন্তব্যের জেরে শুধু বিচারাধীন বন্দিদেরই নয়, রাজ্যের প্রতিটি মানুষের জীবনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ‘হুমকি’ দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো একজন রাজনীতিক, যাঁর প্রতিটি বক্তব্যের একটি সামাজিক অভিঘাত রয়েছে, সেক্ষেত্রে এমন মন্তব্য সমাজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন এপিডিআর-এর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর। তাঁর আশঙ্কা, এই ধরনের মন্তব্য ‘পুলিশকে ও সাধারণ মানুষকে আইন হাতে নিয়ে খুন করতে প্ররোচনা দেবে।’
এপিডিআর-এর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধি যোগাযোগ করেছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক তথা বিজেপি রাজ্য সম্পাদক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে। ঘটনার দিন তিনিও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘শুভেন্দু অধিকারী একটি নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে, নির্দিষ্ট একটি পরিস্থিতিতে ওই মন্তব্য করেছেন। এই নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীও ইতিমধ্যেই যা বলার বলেছেন।’