কলকাতা: দলের কথা না শুনে জোর করে ভোটে (Panchayat Election 2023) দাঁড়ালে পড়তে হবে শাস্তির মুখে, নবজোয়ার কর্মসূচি থেকেই এই কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisekh Banerjee)। যদিও সেই নির্দেশকে তোয়াক্কা না করেই দিকে দিকে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের (Trinamool Congress) কর্মীদের। দলের টিকিট না পাওয়াতেই অনেকেই ভিড়েছেন অন্য দলে। অনেকে আবার নির্দল থেকে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। এদিকে গোঁজ প্রার্থীদের শায়েস্তা করতে জেলায় জেলায় কড়া পদক্ষেপ করছে ঘাসফুল শিবির। হাতে আর মাত্র ৫টা দিন। ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট রাজ্য়ে। ভোটের মুখেও গোঁজ প্রার্থীদের সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়া থামছে না শাসকদলে। নজিরবিহীন এই ধারাবাহিক পদক্ষেপের জেরে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচশোর বেশি গোঁজ প্রার্থীকে দলের সাসপেনশনের মুখে পড়তে হয়েছে।
রবিবার দলের তরফে ফের জানানো হয়েছে রাজ্যজুড়ে প্রায় ১৫০ জন নির্দলকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। যার মধ্যে ৪০ জনের বেশি নির্দল প্রার্থী রয়েছেন শুধু ঝাড়গ্রামেই। এদিকে অতীতে দেখা গিয়েছে দলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা টিকিট না পেয়ে নির্দল দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা জিতলে আবার ফিরেছেন দলে। কংগ্রেস কিংবা তৃণমূলের মতো দলে এমনটা হামেশাই হতে দেখা গিয়েছে। তবে ব্যতিক্রম যে হয়নি এমনটা নয়। গত বছর পুর নির্বাচনে গোটা বাংলাতেই দলের হুইপ অগ্রাহ্য করে নির্দল থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকেই। জিতেও গিয়েছিলেন। কাউন্সিলর হয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁদের এখনও দলে ফেরায়নি তৃণমূল।
আভাস মিলেছিল আগেই
ফলে পঞ্চায়েত ভোটেও যে সেই আভাস রয়েছে তা আগেই বোঝা গিয়েছিল বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই আরও কঠোর হচ্ছে দল। ফল স্বরূপ পঞ্চায়েতের আগে গোটা রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের নির্দল গোঁজ সাসপেনশনের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল সাড়ে পাঁচশোর গণ্ডি।
শুধু যে পঞ্চায়েত বা পুরভোট এমনটা নয়। ২০২১ সালের নির্বাচনের আগেও বহু হেভিওয়েট নেতারা দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। অনেকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু, তারপরেও ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিল দল। ফলে দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে পিছপা হচ্ছেন না ঘাসফুল শিবিরের উপরমহলের নেতারা। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। উদ্দেশ্য একটাই, দলের ভেতর উপদলীয় কার্যকলাপ বন্ধ করা।
শৃঙ্খলাই শেষ কথা
সহজ কথায় নির্বাচনে যারা নির্দল দাড়িয়েছেন তারা যে কখনওই তৃণমূলে ফিরছেন না সেই বার্তাই স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে চাইছে তৃণমূল। ভোটের মুখে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করাই একমাত্র লক্ষ্য। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার, পুরোটাই হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে। প্রচারের সামনের সারিতে থেকেছেন মমতা এবং অভিষেকের মুখ। জেলায় জেলায় ঘুরেছেন অভিষেক। মেগা প্রচারে নেমেছেন আরও ৫৮ নেতা। প্রার্থী বাছাই হোক বা প্রচার, পুরোটাই হচ্ছে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে। যদিও ভোটের ভরা বাজারে লাগাতার হিংসা, রক্তপাত, হানাহানির আবহে এই শৃঙ্খলা রক্ষার ফসল কতটা ঘাসফুল শিবিরের ঘরে ঢোকে সেটাই এখন দেখার।